পালং শাকের উপকারিতা

 সবুজ শাক সবজির মধ্যে এক অতি পরিচিত নাম হল পালং শাক। বেশ কয়েক বছর আগে এ পর্যন্ত শুধু শীতের শাকসবজির তালিকায় পালং অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বর্তমান সময় প্রায় সারা বছরই পালং শাক বাজারে পাওয়া যায়। পালং শাক খাওয়ায়  অনেক উপকারিতা রয়েছে। 


পালং শাক আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি শাক। এই  শাকে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। বাঙালির বিভিন্ন রান্নায় পালং শাক যোগ করলে স্বাদ যেমন বাড়ে তেমন সেই রান্নার পুষ্টিগুণ ও বাড়ে, ভাত বা রুটি দুই প্রকার খাবারের সঙ্গেই এই পালং শাক খাওয়া যায়। তাই খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখুন পালং শাক জেনে নিন পালং শাকের কিছু অসাধারণ গুণ সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ 

পালং শাকের যত উপকারিতা ঃ

  • পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন সি এবং বিটা কেরোটিন থাকায় তা মানুষের কোলনের কোষগুলোকে রক্ষা করে।
  • বাতের ব্যথা অস্টিওপোবসিস, মাইগ্রেশন মাথাব্যথা দূর করতে প্রদাহ নাশক হিসেবে পালং শাক কাজ করে।
  • পালং,, শাক স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা  বাড়াতে খুবই কার্যকর।
  • পালংশাকে প্রচুর আয়রন ও ভিটামিন সি থাকায় রক্তস্বল্পতা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • পালং শাক পেট পরিষ্কার রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
  • কিডনিতে পাথর থাকলে তা গুঁড়ো করতে সাহায্য করে ।দেহ ঠান্ডা ও স্নিগ্ধ রাখে পালং শাক।
  • অনেকের মেঘ বৃদ্ধি ও দুর্বলতায় হাঁফ ধরে তারা পালন পাতার রস খেলে উপকার পাবেন। পালং শাক কোষ্ট কাঠিন্য দূর করে।
  • পালংশাকে ১৩ ধরনের ফআভওনয়এন্ডস আছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা ও প্রোস্টেড ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।
  • পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকায় এটি মাসিক জনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। আলম সাব দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পালং শাক খুবই উপকারী।

রক্তের শর্করা কমায়ঃ

পালং শাককে ডায়াবেটিক সুপার ফুড বলার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। মাত্র এক বাটি পালং শাক খেয়ে শরীরে একজন মানুষের জন্য দৈনিক সুপারিশকৃত ম্যাগনেসিয়ামের ৪০ শতাংশ সরবরাহ করা সম্ভব, যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে আমেরিকার  ইন্সটিটিউট অব ক্যান্সার রিসার্চ এর মতে, ঘর
ক্যারোটিনয়েডস সমৃদ্ধ খাবার স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।

রক্তচাপ কমায় ঃ

প্রাকৃতিক উপায়ে রক্তচাপ কমাতে বেশি করে পালং শাক খেতে পারেন। এই শাককে কোন দ্বিধা ছাড়াই ড্যআস ডায়েটে স্থান দিতে পারেন।  ড্যআস ডায়েট হলো রক্তচাপ কে নিয়ন্ত্রণে রাখার খাদ্য তালিকা। পালং শাকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফোলেট রয়েছে। এসব পুষ্টি রক্তনালীকে শিথিল করে রক্তচাপ কমিয়ে থাকে।

হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় ঃ

প্রথমে একটা হতাশার গল্প শোনা যাক, পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি অক্সালেটস ও রয়েছে। অক্সালেটস হল আঞ্চলিক এসিডের সল্ট। এই লবণ শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণকে কঠিন করে তোলে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অস্টিওপোরোসিস ফাউন্ডেশন এর মতে , পালং শাককে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন কে-ও থাকে। গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে ভিটামিন কে হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে পারে এবং হাড় ভাঙ্গার ঝুঁকি কমাতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ঃ

বাথরুমের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি হল ফাইবার। বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অথবা প্রতিরোধে ডায়েটে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার কে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। পালং শাককে সলিউল ফাইবার ও ইনসুলিওয়াল ফাইবার রয়েছে। যা কোষ্ঠকাঠিন্যকে তাড়াতে সাহায্য করে। এক বাটি রান্না করা পালং শাকে ৪.৩ গ্রাম ফাইবার পেতে পারেন যা একজন মানুষের জন্য দৈনিক সুপারিশকৃত ফাইবারের ১৭ শতাংশ।

রক্তশূন্যতার ঝুঁকি কমায়ঃ

হিমোগ্লোবিন বা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে আয়রনের দরকার হয়। শরীরে প্রর্যাপ্ত আয়রন না পেলে রক্তশূন্যতায় ভুগতে পারেন। আপনার জন্য সুখবর হলো ডায়েটে পালং শাক সংযোজন করে শরীরের অন্যান্য উপকার সাধনের পাশাপাশি রক্তশূন্যতা ও এড়াতে পারেন। মাত্র এক বাটি রান্না করা পালং শাক থেকে ৬ মিলিগ্রামের ও বেশি আয়রন পাবেন। যা দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার ৩৬ শতাংশ। রক্তশূন্যতার একটি পরিণতি হল হার্টবিট অস্বাভাবিক হয়ে যায়।

নখ চুলকে সুস্থ রাখ ঃ

পালং শাকে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ফুড ইনফরমেশন কাউন্সিলের মতে উভয় পুষ্টি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন এ সিরাম ও উৎপাদনে সহায়তা করে, যা ত্বক ও চুলকে মসৃণ করে। ভিটামিন সি কোলাজেন নামক প্রোটিনের সহায়তায় চুলকে মজবুত করে তোলে। ভিটামিন সি ও কোলাজেনের যৌথ উদ্যোগে নখ ও মজবুত হয়ে ওঠে এবং বিরক্তি কর হ্যাং নেল প্রতিরোধ করে।

হার্টবিটের স্বাভাবিকতা বজায় রাখে ঃ

গবেষণায় দেখা গেছে পটাশিয়ামের অভাবে হার্টবিট অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এছাড়াও পটাশিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নয়ন স্বাভাবিক, হজম ক্রিয়া ও পেশী কার্যক্রমের সহায়তা করে। মিনারেল টি অস্টিওপোরোসিস ও স্টকের
 ঝুঁকি কমাতে পারে। শরীরে পটাশিয়াম জোগাতে নিয়মিত পালং শাক খেতে পারেন। পালংশাকে পটাশিয়ামের পরিমাণ কলার চেয়েও বেশি। ১০০ গ্রাম পালং শাক ও ১০০ গ্রাম কলা তুলনা করলে দেখা যাবে পালংশাকে ১০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম বেশি আছে।

দৃষ্টিশক্তির রক্ষা করে ঃ

যারা নিয়মিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদন করেন তাদের এটা অজানা নয় যে চোখের সুরক্ষায় গাজর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তাই বলে কি শুধু গাজরেই খাবেন দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করতে পারে এমন অন্যান্য খাবার ও রয়েছে যেমন পালং শাক। পালং শাকে দৃষ্টির সুরক্ষার পুষ্টি লুটেইন থাকে। আমেরিকান অস্টোমেটিক    অ্যাসোসিয়েশনের মতে ,পালং শাকে লুটেইন নামে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা চোখের ছানি ও ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের এর ঝুঁকি কমাতে পারে।

ধন্যবাদ***



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url