স্বর্ণ মন্দির বান্দরবান

 স্বর্ণ মন্দির বান্দরবান পার্বত্য জেলা সদর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে বালাঘাটা এলাকায় অবস্থিত। এই স্বর্ণ মন্দিরটি মহা সুখ মন্দির বা বৌদ্ধ ধাতু জাদী নামে ও পরিচিত। স্বর্ণমন্দির নাম হলেও এখানে স্বর্ণ দিয়ে তৈরি কোন স্থাপনা নেই। তবে মন্দিরে সোনালী রঙ্গের আধ্যিকের জন্য এটি স্বর্ণ মন্দির হিসেবে পরিচিত।

 পাহাড়ের চূড়ায় তৈরি এসব সুদৃশ্য প্যাগোডা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র একটি তীর্থস্থান। দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য বুদ্ধ ধর্মাবলম্বী অনেক  লোকজন এই স্বর্ণমন্দির দেখতে এবং প্রার্থনা করতে আসেন। গৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক কালে নির্মিত বৌদ্ধ মূর্তির একটি এখানে স্থাপনা করা হয়েছে। এই মন্দিরটি প্রায় ১০ কোটি টাকা  খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্যাগোডা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য বৌদ্ধ স্থাপনার মধ্যে অন্যতম উপাসনালয় বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। পাহাড়ের উপর দেবতা পুকুর নামে একটি পানি সম্বলিত ছোট পুকুর আছে।


স্বর্ণ মন্দিরটি বর্তমানে বান্দরবান জেলার অন্যতম পর্যটন স্থান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে পর্যটকদের। এই প্যাগোডার নির্মাণশৈলী মায়ানমার চীন ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ টেম্পল গুলোর অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে। এই প্যাগোডা আধুনিক ধর্মীয় স্থাপত্যের এক উজ্জ্বল নিদর্শন। প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে এখানে মেলা বসে। প্যাগোডাটি পূজারিদের জন্য সারাদিন খোলা থাকে। কিছুদিন আগে দর্শনার্থীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বর্তমানে দর্শনার্থীদের জন্য স্বর্ণমন্দির উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

পরামর্শ ঃ

  • বিকেল বেলা স্বর্ণমন্দির ভ্রমণের উপযুক্ত সময় বিকেলের সূর্যের আলোতে মন্দির অধভূত সুন্দর রূপ ধারণ করে।
  • সন্ধ্যা ছয়টার পর আর মন্দিরে প্রবেশ করা যায় না।
  • শর্ট প্যান্ট বা লুঙ্গি পরে মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ তাই ভ্রমণ করার সময় বিষয়টি মনে রাখুন।
  • মন্দিরের অভ্যন্তরে জুতা নিয়ে প্রবেশ করা নিষেধ।
  • মন্দিরে প্রবেশের আগে ও পরে ভিক্ষুদের আদব-কায়দা মেনে চলুন।

আরো পড়ুন ঃ আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র খাগড়াছড়ি

যাতায়াত ব্যবস্থা ঃ

ঢাকার আব্দুল্লাহপুর, আরামবাগ, কল্যাণপুর, গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে এস আলম, সৌদিয়া, সেন্টমার্টিন, ইউনিক, হানিফ, শ্যামলী, ডলফিন ইত্যাদি পরিবহনের বাস বান্দরবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও এসি বাস ১০০০ থেকে ১৬০০ টাকা। ঢাকা থেকে বাসে বান্দরবান যেতে সময় লাগে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা।

ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা, সুবর্ণা এক্সপ্রেস, তুর্না, নিশিতা, মহানগর গোধূলি এসব ট্রেনে চট্টগ্রাম যেতে পারবেন। শ্রেণী ভেদে ভাড়া ৩৫০ থেকে ১২৩০ টাকা। এছাড়া ঢাকা থেকে আকাশপথে সরাসরি চট্টগ্রামে যেতে পারবেন।

চট্টগ্রাম বদ্দারহাট থেকে পূবালী ও পূর্বানী নামে দুটি বাস বান্দরবান উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এ দুটি বাসের জন্য প্রতি জন ২২০ টাকা ভাড়া লাগে। চট্টগ্রামের দামপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া বাসে করে বান্দরবান আসতে পারবেন।

বান্দরবান থেকে স্বর্ণমন্দির যাওয়ার উপায়

বান্দরবান থেকে সিএনজি অটোরিকশা বা চান্দের গাড়ি/জীপ ভাড়া করে স্বর্ণ মন্দিরে যেতে পারবেন। শুধু স্বর্ণ মন্দির যাওয়া আসার জন্য ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা নিবে। তবে সাধারণত পর্যটক গণ বান্দরবানের আশে পাশে আরও দর্শনীয় জায়গা যেমন নীলগিরি, নীলাচল চিম্বুক পাহাড়, শৈলী প্রপাত মেঘলা ইত্যাদি এসব জায়গা জন্য আপনি আপনার সময় ও কি কি দেখবেন সেই ইচ্ছে অনুযায়ী ভ্রমণ করলে পছন্দ মতো গাড়ি রিজার্ভ করে নিতে পারবেন।

নীলগিরি, নীলাচল, মেঘলা, স্বর্ণমন্দির এগুলো ঘুরে দেখার জন্য জীপ ভাড়া নিবে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, চাঁদের গাড়ির ভাড়া নিবে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, সিএনজি ভাড়া নেবে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা। দর দাম ঠিক করার আগে কি কি দেখাবেন কোথায় যাবেন ভালো জিজ্ঞাসা করে নিবেন।

স্বর্ণ মন্দির যেতে রাস্তায় আপনাকে ২০ থেকে ৩০ টাকা টোল দিতে হবে আর স্বর্ণ মন্দিরে প্রবেশ করতে জনপ্রতি ২০ টাকা ফ্রি লাগবে।

থাকার ব্যবস্থা ঃ

বান্দরবানে থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে। বান্দরবান শহর ও তার আশেপাশে হোটেল ও রিসোর্ট গুলোর অবস্থান। বান্দরবান থাকার জন্য যে সকল হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে তার মধ্যে।

**হোটেল হিল ভিউ ঃ বান্দরবান শহরের বাস স্ট্যান্ড এর পাশেই ভাড়া ৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা।

**হোটেল হিলটন ঃ বান্দরবান শহরের বাস স্ট্যান্ড এর কাছেই ভাড়া ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা।

**হোটেল প্লাজা ঃ বাস স্ট্যান্ড থেকে পাঁচ মিনিট হাটা দূরত্ব। ভাড়া ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা।

**হোটেল রিভার ভিউ ঃ শহরের সাঙ্গু নদীর তীরে ঘেঁসে হোটেল এর অবস্থান। ভাড়া ৬০০ থেকে ২০০০ টাকা।

**পর্যটন মোটেল ঃ পাহাড় ও লেকের পাশে অবস্থিত। শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে মেঘালয় অবস্থিত। ভাড়া ১২০০ থেকে ২৫০০ টাকা।

আরো পড়ুন ঃ নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র বান্দরবান

খাবারের ব্যবস্থা ঃ

 স্বর্ন মন্দিরে কোন খাবারের ব্যবস্থা নেই। তবে বান্দরবান শহরে  এসে খেতে পারবেন। যাবার সময় কিছু শুকনো খাবার সাথে নিয়ে গেলে ভালো হয়। বান্দরবান শহরের খাওয়ার জন্য রয়েছে বেশ কিছু রেস্তোরা। তার মধ্যে তাজিংডং ক্যাফে, মেঘদুত ক্যাফে, ফুড প্লেস রেস্তোরাঁ, রূপসী বাংলা রেস্তোরাঁ আর ও অনেক রেস্তোরাঁয় খাবারের জন্য ব্যবস্থা আছে।

ধন্যবাদ***


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url