ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদ মান্দা নওগাঁ জেলা

 

 

বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা গ্রামের একটি প্রাচীন মসজিদ। মসজিদটি ধরে রেখেছে সুলতানি আমলের অনন্য নিদর্শন। কুসুম্বা দিঘির পশ্চিম পাড়ে পাথরের তৈরি ধূসর বর্ণের মসজিদটি অবস্থিত। বাংলাদেশের ৫ টাকার নোটে এই মসজিদের ছবি দেওয়া আছে।

চিত্র: কুসুম্বা মসজিদ

পোস্ট সূচিপত্র:


ইতিহাস

মসজিদের প্রবেশদ্বারে বসানো ফলকে মসজিদের নির্মাণ কার লেখা রয়েছে হিজরী ৯৬৬ সাল (১৫৯৮ হতে ১৫৬৯ খ্রিস্টাব্দ) আফগানি শাসনামলের শুর বংশের শেষ দিকের শাসক গিয়াস উদ্দিন বাহাদুর শাহের আমলে সুলাইমান নামে একজন এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।


১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মসজিদটির তিনটি গম্বুজ নষ্ট হয়েছিল। পরে সেগুলো প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সংস্কার করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে মসজিদের চতুর্দিকে এবং পূর্ব পাশে অবস্থিত দিঘির পারে ফুলের বাগান নির্মাণ ও আলোকসজ্জার কাজ করা হয়।

অবস্থান

আত্রাই নদীর পশ্চিম তীরে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলা থেকে চার মাইল উত্তর পশ্চিমে মান্দা নওগাঁ সড়কের পশ্চিম পাশে মসজিদটি অবস্থিত।

আরো পড়ুন: অতুল প্রসাদ সেন কে - অতুল প্রসাদ সেন এর জীবনী সম্পর্কে জেনে নিন 

বিবরণ

মসজিদটি দীর্ঘ ৫৮ ফুট ৪২ ফুট দুই সারিতে ছয়টি গোলাকার গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের গায়ে রয়েছে লতাপাতা নকশা। প্রাচীর ঘেরা মসজিদটির প্রধান ফটকের প্রহরী চৌকি ছিল। মসজিদটিতে ইটের গাঁথুনি সামান্য বাঁকানো কার্নিশ এবং সংলগ্ন আট কোণা বুরুজ। এগুলো থেকে মসজিদের স্থাপত্যে বাংলা স্থাপত্যরীতির প্রভাব পাওয়া যায়। মসজিদের মূল গাঁথুনি ইটের হলেও এর সম্পূর্ণ দেওয়াল এবং ভেতরের খেলান গুলো পাথরের আস্তরণে ঢাকা। মসজিদের স্তম্ভু ভিত্তি, মঞ্চ মেজে ও দেওয়ালের জালি নকশা পর্যন্ত পাথরের। মসজিদটি আয়তাকার এবং এতে রয়েছে তিনটি বে এবং দুটি আইল এর পূর্ব প্রান্তে তিনটি এবং উত্তর দক্ষিণে কি করে প্রবেশপথ। মসজিদের কেন্দ্রীয় মেহেরাবটি পশ্চিম দিকের দেওয়ালে থেকে আলাদা। পশ্চিম দেওয়ালের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং মাঝামাঝি প্রবেশপথ বরাবর দুটি মেহরাব রয়েছে যা মেঝের সমান্তরাল। উত্তর-পশ্চিম কোনে  বে-তে মেহরাব টি একটু উঁচু বেদের উপর বসানো। মোট মেহরাব আছে তিনটি যার সবগুলো কালো পাথরে তৈরি। মসজিদের সম্মুখে ২৫.৮৩ একরের আয়তনের একটি বিশাল জলাশয় রয়েছে। মেহেরাবে আঙ্গুর গুচ্ছ ও লতা পাতার নকশা খোদাই করা রয়েছে। 

মসজিদের ভিতরে উত্তর-পশ্চিম কোণের স্তম্ভের উপর একটি উঁচু আসন আছে। ধারণা করা হয় এই আসনে বসেই তৎকালীন কাজী পাবলিক বিচারকরা এলাকার বিভিন্ন সমস্যার বিচার কার্য পরিচালনা করতেন এবং সকল সমস্যার সমাধান করতেন।

কিভাবে যাওয়া যায়

নওগাঁ হতে রাজশাহী মহাসড়কের আত্রাই নদীর উপর অবস্থিত মান্দা ফেরিঘাট ব্রিজ থেকে পশ্চিম দিকে দুই কিলোমিটার দূরে বিদিরপুর মোড় পার হয়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে কুসুম্বা নামক স্থানের উত্তরে ঐতিহাসিক কুসুম্বা শাহী মসজিদ ও কুসুম্বা দিঘি অবস্থিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url