তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা কবিতা সমূহ
আজ এই আর্টিকেলটিতে তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা বইয়ের সর্বমোট ৯টি কবিতা রয়েছে কবিতা সমূহ লিপিবব্ধ করা হলো।
আমাদের এই বাংলাদেশ
সৈয়দ শামসুল হক
সূর্য ওঠার পূর্বদেশ
বাংলাদেশ!
আমার প্রিয় আপন দেশ
বাংলাদেশ!
আমাদের এই বাংলাদেশ
কবির দেশ বীরের দেশ
আমার দেশ স্বাধীন দেশ
বাংলাদেশ!
ধানের দেশ ধানের দেশ
তেরোশত এই নদীর দেশ
বাংলাদেশ!
আমার ভাষা বাংলা ভাষা
মা। শেখালেন মাতৃভাষা
মিষ্টি বেশ!
মনের ভাষা জনের ভাষা
এই ভাষাতে ভালোবাসা
মায়ের দেশ!
বাংলাদেশ!
আমাদের এই বাংলাদেশ!
আরো পড়ুন ঃ জান্নাত লাভ ও আল্লাহর ভালোবাসা সম্পর্কিত দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত
হাটে যাবো
আহসান হাবিব
হাটে যাবো হাটে যাবো ঘাটে নেই নাও,
নি-ঘাটা নায়ের মাঝি আমায় নিয়ে যাও।
নিয়ে যাবো নিয়ে যাবো কত করে দেবে?
কড়ি নেই কড়া নেই আর কিবা নিবে?
সোনামুখে সোনা হাসি তার কিছু দিও।
হাসি টুকু নিও আর খুশি টুকু নিও।
চল্ চল্ চল্
কাজী নজরুল ইসলাম
চল্ চল্ চল্!
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল,
নিম্মে উতলা ধরণী তল,
অরুণ প্রাতের তরুণ দল
চল্ রে চল্ রে চল্
চল্ চল্ চল্ !!
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত,
আমরা টুটাব তিমির রাত,
বাঁধার বিন্ধ্যাচল।
নব নবীনের গাহিয়া গান
সজীব করিব মহাশ্মশান,
আমরা দানিব নতুন প্রাণ,
বাহুতে নবীন বল।
আরো পড়ুন ঃ কবরের আযাব থেকে মুক্তি, কবর জিয়ারত, কবরবাসীর জন্য ক্ষমা সম্পর্কে বিস্তারিত
তালগাছ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে
সব গাছ ছাড়িয়ে
উঁকি মারে আকাশে।
মনে সাধ, কালো মেঘ ফুঁড়ে যায়
একেবারে উড়ে যায়;
কোথা পাবে পাখা সে?
তাই তো সে ঠিক তার মাথাতে
গোল গোল পাতাতে
ইচ্ছেটি মেলে তার,
মনে মনে ভাবে, বুঝি ডানা এই,
উড়ে যেতে মানা নেই
বাসা খানি ফেলে তার।
সারাদিন ঝর ঝর থথুর
কাঁপে পাতা পত্তর,
উড়ে যেন ভাবে ও,
মনে মনে আকাশেতে বেড়িয়ে
তারাদের এড়িয়ে
যেন কোথা যাবে ও।
তারপরে হওয়া যেই নেমে যায়,
পাতা-কাপা থেমে যায়,
ফেরে তার মনটি-
যেই ভাবে মা যে হয় মাটি তার,
ভালো লাগে আরবার
পৃথিবীর কোণটি।
আমার পণ
মদনমোহন তর্কালঙ্কার
সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি,
সারাদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি।
আদেশ করেন যাহা মরা গুরুজনে,
আমি যেন সেই কাজ করি ভালো মনে।
ভাই বোন সকলেরে যেন ভালবাসি,
একসাথে থাকি যেন সবে মিলেমিশি।
ভালো ছেলেদের সাথে মিশে করি খেলা,
পাটের সময় যেন নাহি করে হেলা।
সুখী যেন নাহি হই আর কারও দুখে,
মিছে কথা কভু যেন নাহি আসে মুখে।
সাবধানে যেন লোভ সামলিয়ে থাকি,
কিছুতে কাহারে যেন নাহি দিই ফাঁকি।
ঝগড়া না করি যেন কভু কারও সনে,
সকালে উঠিয়া আমি বলি মনে মনে।
আরো পড়ুন ঃ বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়কর স্থান সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত
আমাদের গ্রাম
বন্দে আলী মিঞা
আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর
থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর।
পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই
একসাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।
হিংসা ও মারামারি কভু নাহি করি,
পিতা-মাতা গুরুজনে সদা মোরা ডড়ি।
আমাদের ছোট গ্রাম মায়ের সমান,
আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে বাঁচাইছে প্রাণ।
মাঠ ভরা ধান আর জলভরা দিঘি,
চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি।
আম গাছ জাম গাছ বাঁশ ঝাড় যেন,
মিলেমিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন।
সকালে সোনার রবি পূব দিকে ওঠে
পাখি বাঁকে, বায়ু বয়, নানা ফুল ফোটে।
আদর্শ ছেলে
কুসুমকুমারী দাস
আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?
মুখে হাসি, বুকে বল তেজে ভরা মন
'মানুষ হইতে হবে'- এই তার পণ,
বিপদ আসিলে কাছে হও আগুয়ান,
নাই কি শরীরে তবে রক্ত মাংস প্রাণ?
হাত-পা সবারি আছে মিশে কেন ভয়,
চেতনা রয়েছে যার সে কি পড়ে রয়?
সে ছেলে কে চায় বল কথায়-কথায়,
আসে যার চোখে জল মাথা ঘুরে যায়।
সাদা প্রাণে হাসি মুখে কর এই পণ-
'মানুষ হইতে হবে মানুষ যখন'।
কৃষকের শিশু কিংবা রাজার কুমার
সবারি রয়েছে কাজ এই বিশ্ব মাঝার,
হাতে প্রাণে খাট সবে শক্তি কর দান
তোমরা মানুষ হলে দেশের কল্যাণ।
আরো পড়ুন ঃ কলার পুষ্টিগুণ কলার উপকারিতা এবং অপকারিতা
ঘুড়ি
আবুল হোসেন
ঘড়িরা উড়িছে বন মাথায়।
হলুদে সবুজে মন মাথায়।
গোধূলির ঝিকিমিকি আলোয়
লাল- সাদা আর নীল কালোয়
ঘুরিয়া উড়িছে হালকা বায়।
ঘড়িয়া উড়িছে হালকা বায়,
একটু পরিলে টান সুতায়
আকাশে ঘুড়িরা হোঁচট খায়।
সামলে তখন রাখা যে দায়,
উঠিছে নামিছে টালমাটাল।
ভারী যে কঠিন ঘড়ির চাল।
ভারী যে কঠিন ঘড়ির চাল,
সাধ্যি কি চিল পায় নাগাল!
প্যাঁচ লেগে ঘুড়ি কেটে পালায়
আকাশের কোথা কোন কোণায়।
ঘুড়িরা পড়িছে হাতেতে কার,
খবর রেখেছে কেউ কি তার?//
বড় কে
হরিশচন্দ্র মিত্র
আপনাকে বড় বলে
বড় সেই নয়,
লোকে যারে বড় বলে
বড় সেই হয়।
বড় হওয়া সংসারেতে
কঠিন ব্যাপার,
সংসার সে বড় হয়
বড় গুন যার।
গুণেতে হইলে বড়
বড় বলে সবে,
বড় যদি হতে চাও
ছোট হও তবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url