বিশ্ব বাবা দিবস বা পিতৃ দিবস কত তারিখ
বাবা দিবস বা পিতৃ দিবস মধ্যযুগ থেকে ইউরোপের ক্যাথলিক দেশগুলোতে মার্চের ১৯ তারিখে দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। আমেরিকার দেশগুলোতে প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার দিবসটি পালিত হয়।
বাবা দিবসের ইতিহাস
বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় বিশ্ব বাবা দিবস এ হিসেবে বিশ্বব্যাপী জুন মাসের তৃতীয় রবিবার দিবস টি পালন করা করা হবে।
এ দিবসের ধারণাটি পশ্চিমা বিশ্বের হলেও দিবসটি এখন বাংলাদেশসহ প্রায় সব দেশের উদযাপন করা হয়। কিন্তু কিভাবে শুরু হলো বাবা দিবস উদযাপন ধারণা করা হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বাবা দিবস পালন শুরু হয়। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল এটা বোঝানোর জন্য এই দিবস পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্ট এলাকার একটি গির্জায় "বাবা দিবস" প্রথম পালিত হয়। অন্যদিকে ১৯০৯ সালে ভার্জিনিয়ায় ও বাবা দিবস পালন করা হয়। এরপর ওয়াশিংটনের স্মার্ট ডড নামের এক নারীর উদ্যোগে ১৯১০ সালের ১৯শে জুন মা দিবসের পাশাপাশি বাবা দিবস পালন করা হয়।
ওই সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন উইড্রো উইলসন তিনি ঘোষণা করেন একটি দিন মায়ের সম্মানের জন্য উৎসর্গের পাশাপাশি বাবার সম্মানের জন্য উৎসর্গ করা হবে।
আরো পড়ুনঃ কিয়ামতের ১৩১টি আলামত সম্পর্কে বিস্তারিত
কিন্তু অনেকেই দিবসটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলেন। দাবি করেন, সন্তানের প্রতি মায়ের মমতা ও মানসিক টান বাবার মধ্যে অনুপস্থিত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের পাশাপাশি বাবা ও যে সন্তানের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ, এ ধারণা ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে দানা বাঁধতে শুরু করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করার জন্য একটা বিল উত্থাপন করা হয়।
সনোরা স্মার্ট ডডের অনেক প্রচেষ্টার পর বাবা দিবসের ধারণাটি আশার আলো দেখা পায়। ক্যালেন্ডার এই দিনটি আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়। এরপর ১৯২৪ সালে তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ দিবসটিতে পূর্ণ সমর্থন দেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন বাবা দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করেন।
শুরুর দিকে বাবা দিবসের এতটা জনপ্রিয়তা না থাকলেও বর্তমানে বাবা দিবসকে বেশ জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালন করা হয়। আপনি জানলে অবাক হবেন বাবা দিবস পালনে প্রতিবছর এক মিলিয়নের ও বেশি ডলার খরচ করেন আমেরিকানরা। শুধু আমেরিকান নয় একজন প্রকৃত সন্তান হিসেবে বাঙালিদেরও উচিত এ বিশেষ দিনটিতে নিজের বাবাকে সম্মান এবং শ্রদ্ধা করা।
আরো পড়ুনঃ কবরের আযাব থেকে মুক্তি, কবর জিয়ারত, কবরবাসীর জন্য ক্ষমা সম্পর্কে বিস্তারিত
বাবা দিবসের প্রয়োজনীয়তা
আপাত দৃষ্টিতে অনেকের কাছে মা দিবস বা পিতৃ দিবস পালনের বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পায় না। তাই বলে এ ধরনের দিবস গুলো একেবারেই যে অপ্রয়োজনীয় তেমনটা কিন্তু মোটেও বলা যাবে না। সন্তানের জন্য বাবার ভালোবাসা অসীম মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসার উদাহরণ হয়ে আছেন। তিনি সন্তান হুমায়ুনের জীবনের বিনিময়ে নিজের জীবন ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। এমন স্বার্থহীন যার ভালবাসা সেই বাবাকে সন্তানের খুশির জন্য জীবনের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়। পিতৃ দিবসে সন্তানদের সামনে সুযোগ আসে বাবাকে অন্তরের অন্তর স্থল থেকে ধন্যবাদ জানানোর। তাছাড়া পিতৃ দিবস পালনের ফলে সমাজে এবং পরিবারে বাবাদের যে অবদান তা যে সমাজ এবং নিজের সন্তানেরা মূল্যায়ন করছে। এ বিষয়টিও বাবাদের বেশ আনন্দ দেয় তাছাড়া অনেক সন্তানই আছে যারা পিতা -মাতার দেখাশোনার প্রতি খুব একটা মনোযোগী নয়। মা দিবস বা বাবা দিবস তাদের চোখের সামনের পর্দা টা খুলে ফেলে পিতা-মাতার প্রতি তার দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে তাই বলা যায় পরিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে মা দিবস বা বাবা দিবসের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। মোটকথা আমাদের পরিবার তথা সমাজে পিতার যে গুরুত্ব তা আলাদাভাবে তুলে ধরায় পিতৃ দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য। বাবাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দিবসটি পালন করা হয।
আরো পড়ুনঃ সূরা ফাতিহা ও ছোট ১০ টি সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ অর্সথহ
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url