কাঁচা হলুদের উপকারিতা পুষ্টিগুণ ও ঔষধি গুনাগুণ
আজ এই আর্টিকেলটিতে হলুদের উপকারিতা পুষ্টিগুণ ঔষধি গুনাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
প্রতিদিনের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে কাঁচা হলুদ খুবই উপকারী একটা উপাদান। সকালে উঠেই খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদ আপনাকে নানা রকম রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। সাধারণত রূপচর্চায় কাঁচা হলুদের ব্যবহারের কথা আমরা বেশি জেনে থাকি। পাশাপাশি হলুদ রান্নায় অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে আমরা ব্যবহার করে থাকি। তবে এর বাহিরেও হলুদের আরেকটি ওষুধি গুণাগুণ আছে।
আরো পড়ুনঃ ঘরেই চিকেন গ্রিল তৈরির সহজ রেসিপি
কাঁচা হলুদের উপকারিতা
- একটুখানি কাঁচা হলুদ আপনার হজম শক্তি বাড়িয়ে দিতে পারে । ফলে সহজেই খাবার পরিপাক হতে সাহায্য করে হলুদ।
- আপনার হাড় ক্ষয় হচ্ছে। তাহলে প্রতিদিন একটু টুকরো করে কাঁচা হলুদ খান। কেননা কাঁচা হলুদের থাকা কারকিউমিন উপাদান হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
- কাঁচা হলুদের থাকা ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে খাদ্য নালীকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
- যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য বিশেষ উপকারী কাঁচা হলুদ। কেননা এটি রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে ও ইনসুলিন হরমোন এর কাজ করতে সাহায্য করে।
- দাঁতে নানা রকম জীবাণু ও মাড়িতে ক্ষয় ধরে। কাঁচা হলুদের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান দাঁতকে জীবাণু সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখে। সেই সঙ্গে দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোধ করে এবং দাঁতকে মজবুত করে তুলতে সাহায্য করে।
- হলুদের থাকে অনেক আয়রন রয়েছে ।রক্তে আয়রনের পরিমাণ কমে গেলে হলুদ তা বাড়াতে সহায়তা করে।
- কোলেস্টেরল সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের জন্য কাঁচা হলুদ বিশেষ উপকারী, এটা তাদের কোলেস্টেরল এর সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদের আন্টি ওবেসিটি প্রপাটি থাকায় নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খেলে তা শরীরে মেদ জমতে বাধা দেয়।
- কাঁচা হলুদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ আমাদের বিষন্ন মনমরা ভাব বদ মেজাজ ডিপ্রেশন কাটিয়ে মনকে চনমনে করে তুলতে সাহায্য করে।
হলুদের পুষ্টিগুণ
গবেষণায় দেখা গেছে যায় এক টেবিল চামচ হলুদ গুড়ায় যে পরিমাণ পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়
- ক্যালোরি ২৯ গ্রাম।
- প্রোটিন ০.৯১ গ্রাম।
- কার্বোহাইড্রেট ৬.৩১ গ্রাম।
- আঁশ ২.১ গ্রাম।
- গ্লুকোজ ০.৩ গ্রাম।
- ম্যাঙ্গানিজ ২৬%
- আয়রন ১৬%।
- পটাশিয়াম ৫%।
- ভিটামিন সি ৩%।
- সামান্য পরিমাণ ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, কপার ও জিংক পাওয়া যায়।
হলুদের ঔষধি গুনাগুন
- সাধারণ কাঁটা ছেড়ায় হলুদ এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ক্ষত দ্রুত সারাতে বাটা হলুদে উষ্ণ পানি মিশিয়ে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিন দ্রুত সেরে উঠবে।
- রোদে পোড়া দাগ বয়সের বলিরেখা ত্বকের ছোপ ছোপ কালো দাগ দূর করতে কাঁচা হলুদের সাথে সামান্য পরিমাণ শসার রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। কিছুদিনের মাঝে দেখবেন দাগ দূর হবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
- সর্দি কাশিতে হলুদ খুব উপকারী। এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে বাটা হলুদ সামান্য মাখন এবং গোলমরিচ গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে উপকার পাবেন। কাশি তো দূর হবেই গলা ব্যথা থাকলেও দ্রুত সেরে যাবে।
- অন্ত্রের রোগে হলুদ মহৌষুধ। অন্ত্রের রোগ থেকে মুক্তি পেতে এক চামচ পরিমাণ কাঁচা হলুদের রস পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন খান অন্ত্রের রোগ সেরে যাবে। আবার ডায়রিয়া ছাড়াতে ও হলুদ অনন্য উপকারী।
- হলুদ দেহের রক্ত পরিষ্কার করে বিশ্বাস করে আর্য়ু শাস্ত্র। রক্তের ঘাটতি বা রক্তশূন্যতা দেখা দিলে হলুদ বাটা খেলে উপকার পাওয়া যাবে। হলুদ রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। সকালে এক চামচ কাঁচা হলুদের রস ও সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে নিয়মিত খেলে রক্তশূন্যতা দূর হবে।
- হলুদে থাকা কারকিউমিন অ্যান্টি ডায়িবেটিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কাঁচা হলুদ ইনসুলিন হরমোনের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তে সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও অগ্ন্যাশয়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- কাঁচা হলুদের ইনফ্লেমেটরি গুণ আমাদের তলপেটে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- বহু প্রাচীনকাল থেকেই কাঁচা হলুদকে হাড়ের নানা রকম রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। হাত-পা বা কথাও মচকে গেলে চুন হলুদ লাগানোর কথা তো আমরা সবাই জানি। এছাড়া কাঁচা হলুদ বেটে ভাঙ্গা হাড়ের জায়গায় লাগালে তা উপকার দেয়। দুধে কাঁচা হলুদ দিয়ে খেলে ও তা এক্ষেত্রে উপকার দেয়। হলুদের এন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ ব্যথা প্রদাহ কমায় এবং হাড়ের টিস্যু গুলি রক্ষা করে ও ভাঙ্গা হার জোড়া লাগাতে সাহায্য করে।
ধন্যবাদ***
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url