সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ অর্থ সহ ফজিলত
আজ এই আর্টিকেলটিতে সুরা মুলকের বাংলা উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ এবং সুরা মূলকের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
সূরা আল মূলক
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
১। বাংলা উচ্চারণঃ তাবা-রাকাল্লাযী বিয়াদিহিল্ মুলক, ওয়া হুওয়া আলা-কুল্লি শাইয়িন ক্বাদিরু।
অর্থঃ মহামহিমান্বিত তিনি, সর্বময় কর্তৃত্ব যার করায়ত্ব। তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
২। বাংলা উচ্চারণঃ নিল্লাযী খালাক্বাল মাওতা ওয়াল হায়া-তা লিইয়াবলাকুম আইয়্যুকুম আহসানু আমালান ওয়া হুওয়াল আযীযুল গাফূর।
অর্থঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন--- তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য তোমাদের মধ্যে কে কর্মে উত্তম। তিনি পরক্রমশালী ক্ষমাশীল।
৩। বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাযী খালাক্বা সাব 'আ সামা ওয়া-তিন ত্বিবা ক্বান; মা-তারা-ফী খালক্বির রাহমা-নি মিন তাফা--উতিন; ফারজ্বি'ইল বাস্বারা হাল তারা-মিন ফুতুর।
অর্থঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন থরে থরে সপ্তকাশ । তুমি দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোন খুজ দেখতে পাবেনা। আবার তাকিয়ে দেখো কোথাও কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি?
৪। বাংলা উচ্চারণঃ ছুম্মার জ্বি 'ইল বাস্বারা কাররাতাইনি ইয়ানক্বালিব ইলাইকাল বাস্বারু খা-সিআওঁ ওয়া হুওয়া হাসীর।
অর্থঃ বারবার তাকিয়ে দেখ, তোমার চোখ ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসবে।
৫। বাংলা উচ্চারণঃ ওয়া লাক্বাদ যাইয়্যান্নাস সামা- আদ দুনইয়া- বিমাস্বা- বীহা ওয়া জ্বা আলনা-হা রুজুমাল লিশ শায়া- ত্বীনি ওয়া আ'তাদনা- লাহুম আযা-বাস সায়ীর।
অর্থঃ আমি (তোমাদের) নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং সেগুলোকে করেছি শয়তানের জন্য ক্ষেপণাস্ত্রবৎ । আর এ (শয়তানদের) জন্য প্রযস্তর রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।
আরো পড়ুনঃ সূরা ফাতিহা ও ছোট ১০ টি সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ অর্সথহ
৬। বাংলা উচ্চারণঃ ওয়া লিল্লাযীনা কাফারু বিরাব্বিহিম আযা-বু জাহান্নাম! ওয়া বি'সাল মাস্বীর।
অর্থঃ যারা তাদের রবকে অস্বীকার করেছে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।
৭। বাংলা উচ্চারণঃ ইযা~উলকু ফীহা- সামি'উ লাহা-শাহীক্বাও ওয়া হিয়া তাফূর।
অর্থঃ যখন তাদেরকে সেখানে নিক্ষেপ করা হবে তখন তারা জাহান্নামের বিকট শব্দ শুনতে পাবে আর তা হবে উদ্বেলিত।
৮। বাংলা উচ্চারণঃ তাকা-দু তামাইয়্যাযু মিনাল গাইযি; কুল্লামা~ উলক্বিয়া ফীহা-ফাওজুন সালাআলাহুম খাযানাতুহা~আলাম ইয়া'তিকুম নাযীর।
অর্থঃ রোষে জাহান্নাম ফেটে পড়তে চাইবে। যখনই এতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, এর পাহারাদার (ফেরেশতারা) জিজ্ঞাসা করবে, তোমাদের কাছে কি কোন সাবধানকারী আসেনি?
৯। বাংলা উচ্চারণঃ ক্বা-লূ বালা-ক্বদ জ্বা--- আনা-নাযীর; ফাকাযযাবনা -ওয়া কুলনা-মা-নাযযালাল্লা-হু মিন শাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা-ফ্রী দ্বালা-লিন কাবীর।
অর্থঃ তারা বলবে হ্যাঁ অবশ্যই আমাদের কাছে সাবধানকারী এসেছিল কিন্তু আমরা তাকে মিথ্যাবাদী গণ্য করেছিলাম এবং বলেছিলাম আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি তোমরা তো মহা বিভ্রান্তি দিতে রয়েছো।
১০। বাংলা উচ্চারণঃ ওয়া ক্বা-লূ লাও কুন্না- নাসমা'উ আও না'ক্বিলু মা-কুন্না ফী~ আস্বাহা-বিস সা'য়ীর
অর্থঃ তারা আরও বলবে হ্যাঁ আমরা যদি শুনতাম ও বিবেক বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম, তাহলে আমরা দাউ দাউ করে জ্বলা আগুনের অধিবাসী হতাম না।
আরো পড়ুনঃ দৈনিন্দন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ দোয়া জিকির সমূহ অর্থসহ
১১। বাংলা উচ্চারণঃ ফা'তারা ফূ বিযামবিহিম, ফাসুহক্বাল লিআস্বাহা-বিস সা'য়ীর।
অর্থঃ এভাবে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নিবে। ধ্বংস দোযখ বাসীদের জন্য।
১২। বাংলা উচ্চারণঃ ইন্নাল লাযীনা ইয়াখশাওনা রাব্বাহুম বিলগাইবি লাহুম মাগফিরাতুওঁ ওয়া আজ্বরুন কাবীর।
অর্থঃ যারা না দেখে তাদের রব কে ভয় করে, নিশ্চয় তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।
১৩। বাংলা উচ্চারণঃ ওয়া আসিররূ ক্বাওলাকুম আওয়িজ্বহারূ বিহী ইন্নাহূ আলীমূম বিযা-তিস্ব স্বুদূর।
অর্থঃ তোমরা চুপে চুপে কথা বল বা জোরে কথা বল (তা আল্লাহর কাছে সমান) তিনি তো অন্তর্যামী।
১৪। বাংলা উচ্চারণঃ আলা-ইয়া 'লামু মান খালাক্বা; ওয়া হুয়াল লাত্বীফুল খাবীর।
অর্থঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানবেন না? অথচ তিনি সুক্ষ্ম-দর্শী সম্যখ অবগত।
১৫। বাংলা উচ্চারণঃ হুয়াল্লাযী জ্বা 'আলা লাকুমুল আরদ্বা যালূলান ফামশূ ফী মানা-কিবিহা-ওয়া কুলূ মিররিযক্বিহী; ওয়া ইলাইহিন নুশূর।
অর্থঃ তিনি ভূমিকে তোমাদের জন্য সুগম করে দিয়েছেন। তোমরা তার কাঁধে বিচরণ কর, আর তার দেওয়া রিযক আহার করো। পুনরুজ্জীবন তাঁরই কাছে হবে।
আরো পড়ুনঃ আয়াতুল কুরসী ও সূরা হাশরের শেষের ৩ আয়াত বাংলা অর্থসহ ফযীলত
১৬। বাংলা উচ্চারণঃ আ আমিনতুম মান ফিস সামা--ই আই ইয়াখসিফা হাইজা
অর্থঃ তোমরা কি এ থেকে নির্ভর হয়ে গেছো যে, তিনি আকাশে রয়েছেন তিনি তোমাদেরকেসহ ভূমিকে দমিয়ে দিবেন অতঃপর তা আকস্মিক ভাবে থরথর করে কাঁপতে থাকবে?
১৭। বাংলা উচ্চারণঃ আ আমিনতুম মান ফিস সামা--ই আইঁ ইউরসিলা 'আলাইকুম হা-স্বিবান; ফাসাতা 'লামূনা কাইফা নাযীর।
অর্থঃ অথবা তোমরা কি এ থেকে নির্ভয় হয়েছো যে, যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের উপর কংকর বর্ষণকারী ঝঞ্ঝা পাঠিয়ে দিবেন। তখন তোমরা জানতে পারবে যে কিরূপ ছিল আমার সতর্কবাণী।
১৮। বাংলা উচ্চারণঃ ওয়া লাক্বাদ কাযযাবাল লাযীনা মিন ক্বাবলিহিম ফাকাইফা কা-না নাকীর।
অর্থঃ এদের পূর্ববর্তীগণ ও মিথ্যা আরোপ করেছিল এখন দেখ, আমার পাকড়াও কেমন (শক্ত) ছিল।
১৯। বাংলা উচ্চারণঃ আওয়ালাম ইয়ারাও ইলাত্ব ত্বাইরি ফাওকাহুম স্বা- ফফা তিওঁ ইয়াক্ববিদ্বনা। মা-ইউমসিকুহুন্না ইল্লার রহমা-নু; ইন্নাহূ বিকুল্লি শাইয়িম বাস্বীর।
অর্থঃ এরা কি এদের উপর উড়ন্ত পাখিকে পাখা ছড়িয়ে দিতে এবং গুটিয়ে নিতে দেখে না? দয়াময় আল্লাহ ছাড়া আর কেউ তাদেরকে স্থির রাখেনা। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছুর প্রতি লক্ষ্য রাখেন।
২০। বাংলা উচ্চারণঃ আম্মান হা-যাল্লাযী হুওয়া জুন্দুল লাকুম ইয়ানস্বুরুকুম মিন দূনির রাহমা-নি ইনিল কা-ফিরূনা ইল্লা-ফী গুরূর।
অর্থঃ কোন সেনাবাহিনী তোমাদের কাছে আছে কি দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত তোমাদেরকে সাহায্য করবে? আসলে কাফিরেরা ধোকায় পড়ে আছে।
আরো পড়ুনঃ কিয়ামতের ১৩১টি আলামত সম্পর্কে বিস্তারিত
২১। বাংলা উচ্চারণঃ আম্মান হা-যাল্লাযী ইয়ারযুকুকুম ইন আমসাকা রিযক্বাহূ বাল লাজ্বজু ফী উতিওয়িওঁ ওয়া নূফূর।
অর্থঃ (বল) রাহমান যদি তার রিযক আটকিয়ে রাখেন তাহলে আর কে আছে যে, তোমাদের রিযক দিতে পারে? আসলে এরা বিদ্রোহ ও সত্যবিমুখতায় জিদ ধরে আছে।
২২। বাংলা উচ্চারণঃ আফামাইঁ ইয়ামশী মুকিব্বান আলা-ওয়াজ্বহিহী~আহদা~ আম্মাইঁ ইয়ামশী সাওয়িইয়্যান আলা- স্বিরা-ত্বিম মোস্তাক্বীম।
অর্থঃ (ভেবে দেখো) যে মুখ নিচু করে চলে সে কি বেশি সঠিক পথে আছে, না যে মাথা তুলে সোজাসুজি সরল পথে চলছে?
২৩। বাংলা উচ্চারণঃ কুল হুওয়াল লাযী~ আনশাআকুম ওয়া জ্বা'আলা লাকুমুস সাম'আ ওয়াল অবস্বা-রা ওয়াল আফইদাতা; ক্বিলীলাম মা- তাশকরূন।
অর্থঃ (হে রাসুল!) এদেরকে বলে দিন, তিনিই (আল্লাহ) তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ। কিন্তু তোমরা কমই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।
২৪। বাংলা উচ্চারণঃ কুল হুওয়াল্লাযী যারা-আকুম ফিল আরদ্বি ওয়া ইলাইহি তুহশারূন।
অর্থঃ এদেরকে বলে দিন, তিনি (আল্লাহ) যিনি তোমাদেরকে দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।
২৫। বাংলা উচ্চারণঃ ওয়া ইয়াকূলূনা মাতা- হা-যাল ওয়া'দু ইন কুনতুম স্বাদিক্বীন।
অর্থঃ ওরা বলে, তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে বল যে, এ ওয়াদা কবে পূর্ণ হবে?
আরো পড়ুনঃ রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি সম্পর্কিত দোয়া অর্থ সহ বিস্তারিত
২৬। বাংলা উচ্চারণঃ কুল ইন্নামাল ইলমু ইনদাল লা-হি , ওয়া ইন্নামা~ আনা নাযীরুম মুবীন।
অর্থঃ আপনি বলে দিন, এ বিষয়ে (সঠিক) জ্ঞান তো আল্লাহরই কাছে আছে। আমি তো স্পষ্ট সাবধানকারী মাত্র।
২৭। বাংলা উচ্চারণঃ ফালাম্মা-রাআওহু হুম যুলফাতান সী-আত উজূহুল লাযীনা কাফারূ ওয়া ক্বীলা হা-যাল লাযী কুনতুম বিহী তাদ্দা'ঊন।
অর্থঃ তারপর যখন তারা সেই প্রতিশ্রুতিকে আসন্ন দেখবে তখন কাফিরদের মুখমন্ডল ম্লাল হয়ে যাবে। তখন তাদেরকে বলা হবে, এটাই ঐ জিনিস যা তোমরা চাচ্ছিলেন।
২৮। বাংলা উচ্চারণঃ কুল আরাআইতুম ইন আহলাকানিয়াল্লা-হু ওয়া মাম মা'ইয়া আও রাহিমানা-ফামাইঁ ইউজ্বীরুল কা-ফিরীনা মিন আযা-বিন আলীম।
অর্থঃ (হে রাসুল!) আপনি বলুন, তোমরা কি ভেবে দেখেছ যে, যদি আল্লাহ আমাকে ও আমার সাথিদেরকে ধ্বংস করে দেন বা আমাদের উপর দয়া করেন, তবে কাফিরদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তি থেকে কে রক্ষা করবে।
২৯। বাংলা উচ্চারণঃ কুল হুওয়ার রাহমা-নু আ-মান্না- বিহী ওয়া 'আলাইহি তাওয়াক্বালনা-, ফাসাতা'লামূনা মান হুওয়া ফী দ্বালা-লিম মুবীন।
অর্থঃ বলুন, তিনি দয়াময়। তাঁরই উপর আমরা ঈমান এনেছি এবং তাঁরই উপর আমরা ভরসা করে আছি। শিগগিরই তোমরা জানতে পারবে যে, কারা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে।
৩০। বাংলা উচ্চারণঃ কুল আারাআইতুম ইন আস্ববাহা মা-- উকুম গাওরান ফামাইঁ ইয়া'তীকুম বিমা--ইম মা'য়ীন।
অর্থঃ (আরো) বলুন, তোমরা কি ভেবে দেখেছ যে, যদি তোমাদের (কূপের) পানি মাটিতে তলিয়ে যায়, তাহলে কে তোমাদের কে বহমান পানির ধারা বের করে দেবে?
আরো পড়ুনঃ জান্নাত লাভ ও আল্লাহর ভালোবাসা সম্পর্কিত দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত
সুরা মূলকের ফজিলত ঃ
এ সূরাটির ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। তন্মধ্যে কতিপয় ফজিলত বর্ণনা করা হলো। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলার কিতাবে ৩০ আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে। সেই সূরাটির সুপারিশে আল্লাহতায়ালা গুনাহ মাফ করবেন। অন্য এক হাদিসে বর্ণিত, কোরআন মাজীদে এমন একটি সূরা আছে। যে সূরাটি তার পাটকারীর পক্ষে লড়বে। শেষ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিবেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রাতে শোয়ার পূর্বে সূরা আলিফ লাম মিম, আস- সাজদাহ এবং সূরা মূলক পাঠ করতেন। (কুঃ কারিম)।
আল্লাহ হাফেজ***!
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url