যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর ধারা সমূহ সহ বিস্তারিত
যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮
(২০১৮ সনের ৩৯ নং আইন)
[সোমবার, অক্টোবর ১, ২০১৮ ]
[ঢাকা, ১৬ আশ্বিন, ১৪২৫/০১ অক্টোবর, ২০১৮]
আরো পড়ুনঃ পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩
সংসদ কর্তৃক গৃহীত নিম্নলিখিত আইনটি ১৬ আশ্বিন, ১৪২৫ মোতাবেক ০১ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতিলাভ করিয়াছে এবং এতদ্বারা এই আইনটি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছে:-
বিবাহের সময় বা তৎপূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে যৌতুক গ্রহণ বা প্রদান নিরোধ সংক্রান্ত আইন Dowry Prohibition Act, 1980 রহিতক্রমে উহার বিধানাবলী বিবেচনা করিয়া সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে নূতন ভাবে আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু বিবাহের সময় বা তৎপূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে যৌতুক গ্রহণ বা প্রদান নিরোধ সংক্রান্ত আইন Dowry Prohibition Act, 1980 (Act no. XXXV of 1980) রহিতক্রমে উহার বিধানাবলী বিবেচনা করিয়া সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে নূতনভাবে আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
আরো পড়ুনঃ নামাজের সালাম ফেরানোর পর দোয়া ও জিকির
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। সংজ্ঞা-
(ক) "পক্ষ” অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিবাহের বর বা কনে অথবা বর বা কনের পিতা-মাতা অথবা বর বা কনের পিতা-মাতার অবর্তমানে বৈধ অভিভাবক অথবা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সহিত জড়িত বর বা কনে পক্ষের অন্য কোনো ব্যক্তি, এবং
(খ) "যৌতুক" অর্থ বিবাহের এক পক্ষ কর্তৃক অন্য পক্ষের নিকট বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বশর্ত হিসাবে বিবাহের সময় বা তৎপূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ অব্যাহত রাখিবার শর্তে, বিবাহের পণ বাবদ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, দাবিকৃত বা বিবাহের এক পক্ষ কর্তৃক অপর পক্ষকে প্রদত্ত বা প্রদানের জন্য সম্মত কোনো অর্থ-সামগ্রী বা অন্য কোনো সম্পদ, তবে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরিয়াহ) প্রযোজ্য হয় এমন ব্যক্তিগাগের ক্ষেত্রে দেনমোহর বা মোহরানা অথবা বিবাহের সময় বিবাহের পক্ষগণের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব বা শুভাকাঙ্ক্ষী কর্তৃক বিবাহের কোনো পক্ষকে প্রদত্ত উপহার-সামগ্রী ইহার অন্তভুক্ত হইবে না।
৩। যৌতুক দাবি করিবার দত্ত-
যদি বিবাহের কোনো এক পক্ষ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, বিবাহের অন্য কোনো পক্ষের নিকট কোনো যৌতুক দাবি করেন, তাহা হইলে উহা হইবে এই আইনের অধীন একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) কিন্তু অন্যূন ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৪। যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ, ইত্যাদির দণ্ড-
যদি বিবাহের কোনো এক পক্ষ যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ করেন অথবা যৌতুক প্রদান বা গ্রহণে সহায়তা করেন বা যৌতুক প্রদান বা গ্রহণের উদ্দেশ্যে চুক্তি করেন, তাহা হইলে তাহার এই কাজ হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কিন্তু অন্যূন ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৫। যৌতুক সংক্রান্ত চুক্তি ফলবিহীন-
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ সংক্রান্ত কোনো চুক্তি ফলবিহীন (void) হইবে।
৬। মিথ্যা মামলা দায়ের, ইত্যাদির দত্ত-
যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের অধীনে মামলা বা অভিযোগ করিবার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নাই জানিয়াও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৭। অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনঅযোগ্যতা, ইত্যাদি-
এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য, জামিন অযোগ্য এবং আপসযোগ্য হইবে।
আরো পড়ুনঃ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনাদর্শ
৮। অপরাধের বিচার, ইত্যাদি-
এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপীল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
৯। বিধি প্রণয়ন ক্ষমতা-
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
১০। রহিতকরণ ও হেফাজত-
(১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে Dowry Prohibition Act, 1980 (Act No. XXXV of 1980) অতঃপর উক্ত Act বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত Act এর অধীন দায়েরকৃত কোনো মামলা বিচারাধীন থাকিলে বা কোনো মামলা তদন্তাধীন বা চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে অব্যাহত থাকিবে যেন উক্ত Act রহিত হয় নাই।
১১। ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ-
(১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
(২) এই আইন ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দিলে এই আইন প্রাধান্য পাইবে।
**আমরা সবাই বাংলাদেশর আইনের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মান জানাবো এবং যথাযথ ভাবে দেশের সকল আইন মেনে চলব* ধন্যবাদ #
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url