ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে, সে সম্পর্কে যদি আপনি বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে তাহলে আপনার জন্য এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই আর্টিকেলটিতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে? সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। তো আসুন দেখে নেয়া যাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য।
ভূমিকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। সূচনা লগ্ন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোন ধরনের দুর্ঘটনা বা অপ্রীতিকর ঘটে তাহলে তা স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য ঘটনার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই আর্টিকেলটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। যেই দুই ঘটনার কারণে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুইটি দিবস পালন করে থাকে। আর সেই দিবসে দুইটি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ যেই ঘটনা দুইটি সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হবে, তার প্রথম টি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে, এবং কেন এই দিবসটিকে কালো দিবস বলা হয় সে সম্পর্কে নিজে আলোচনা করা হবে। তো চলুন দেখে নেয়া যাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো: ২৩ আগস্ট। প্রতিবছর আগস্ট মাসের ২৩ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস পালন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে, আশা করি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়েছেন। এখন কথা হলো ২৩ আগস্ট কে কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস হিসেবে পালন করা হয়?
আরো পড়ুন:
২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ফুটবল কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সেনাবাহিনীর সদস্যদের দ্বন্দ্ব বাধে। সেখানে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশ সদস্যদের বাকবিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম শিক্ষার্থীদেরকে সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে আসলে, সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পরে ২১শে আগস্ট শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করে। শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনের মাঝে পুলিশ টিয়ারশীল নিক্ষেপ সহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু করে এর ফলে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল যে সেনাবাহিনীর সদস্যদের কে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যাম্প গুটিয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু সেনাবাহিনী তাদের এই দাবি মানতে নারাজ ছিল।
আগস্ট মাসের ২২ তারিখে এই আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাপিয়ে সারা বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। এবং সকল শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে থাকে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত দেখে, ২২ তারিখ সন্ধ্যার মধ্যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য সারাদেশে কারফিউ জারি করা হয় করা হয়
এবং আগস্ট মাসের ২৩ তারিখে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয় এবং এই দুই ইউনিভার্সিটির অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় পরবর্তীতে দুই মাস পর ইউনিভার্সিটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। তখন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, আগস্ট মাসের ২৩ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম আরেকটি দিবস হল শোক দিবস। এই অংশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই আপনি যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, আর্টিকেলের এই অংশটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা আর্টিকেলের এই অংশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে? সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো ১৫ই অক্টোবর। ১৯৮৫ সালের ১৫ই অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ঘটে যায় সবচেয়ে ট্র্যাজেরিময় একটি ঘটনা। ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ছাদধসে অনেক শিক্ষার্থীর মৃত্যুবরণ করেন। দুর্ঘটনার সময় ভবনটিতে, ৪০০ জনের মতো শিক্ষার্থী ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন জগন্নাথ হল তখন টেলিভিশন রুম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সন্ধার পরে সকলেই টেলিভিশন দেখার জন্য সেখানে উপস্থিত হয়েছিল। যারা জায়গা পায়নি তারা ভবনটির জানালা সহ আরো বিভিন্ন জায়গায় বসে টেলিভিশন দেখছিল। হঠাৎ করে রাত ৯ টার দিকে পুরো বন্ধ সে যায়। ঘটনাস্থলীর মৃত্যুবরণ করে অনেকে আর অনেককে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
ঢাকা ইউনিভার্সিটি ইতিহাসে এটি হলো সবচেয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এবং বাংলাদেশের যতগুলো মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল সে সকল দুর্ঘটনার মধ্যে অন্যতম একটি দুর্ঘটনা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ধ্বসে যাওয়ার ঘটনাটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, এটি ছিল মূলত পূর্ব পাকিস্তানের সংসদ বা অ্যাসেম্বলি। নতুন এসেম্বলি ভবন নির্মাণ করার জড়াজীর্ণ এই ভবনটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এই ভবনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করার পর থেকেই, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ভবনটিকে সংস্কার করার পরামর্শ দিয়ে আসছিল কিন্তু সংস্কার করার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই ভবন সম্পর্কে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা রয়েছে আর তা হলো এই ভবনেই, স্পিকার থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন শাহেদ আলী পাটোয়ারী।
এই ভবনটিতে, এসেম্বলি চলাকালে রাজনৈতিক দুই দলের মাঝে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয় এবং এই সংঘর্ষে, চেয়ারের আঘাতে স্পিকার শাহেদ আলী পাটোয়ারী গুরুতর আহত হন, এবং পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন। যাই হোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাকে স্মরণ করার জন্য প্রতিবছর অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস পালন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে, আশা করি সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে পেরেছেন।ইতোমধ্যেই উপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস কবে
বাংলাদেশের যতগুলো দিবস পালন করা হয় তার মধ্যে অন্যতম একটি দিবস হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। প্রতিবছর জুলাই মাসের ১ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠন বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে সম্পৃক্ত সাংগঠনগুলো নানাবিধ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করে থাকে। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী পৃথক পৃথক বাণী দিয়ে থাকে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি টেলিভিশন সমূহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে থাকে। এবং দেশের প্রিন্ট এবং অনলাইন পত্রিকা গুলো বিশেষ কলাম প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস কবে আশা করি সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে পেরেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে, সেই বিষয় সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে।
শেষ কথা
ইতোমধ্যেই উপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি মনোযোগের সহিত পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস কবে বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস কবে?
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url