হালাল ও হারাম উপার্জন হারাম উপার্জন থেকে দান করা ও অপরের অধিকার হরণ
ভূমিকা
"হালাল" অর্থ সম্পূর্ণভাবে মান্য বা অনুমোদিত। ইসলামে এটি অসাধু বা নিষিদ্ধ কিছুর প্রতি ব্যবহৃত হয় যা ধর্মের নির্দিষ্ট নিয়মানুযায়ী মেয়াদের মধ্যে রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, হালাল খাদ্য পণ্য বা পরিষেবা হতে পারে যা ইসলামিক শরীয়ত অনুযায়ী স্বীকৃত।
বৈধ খাদ্যের দ্বারা হৃষ্ট-পুষ্ট শরীর জাহান্নামের ইন্ধন হবে
হযরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: যে গোশত হারাম বস্তু দ্বারা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। যে সকল গোশত হারাম মাল থেকে গঠিত ও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় তার জন্য জাহান্নামই উপযুক্ত স্থান।
(আহমাদ, দারিমী ও বায়হাকী)
ব্যাখ্যা
আমরা যে সকল বস্তু ভক্ষণ করি, যে সকল পানীয় দ্রব্য পান করি, তার নির্যাস বা সার পদার্থ আমাদের দেহের শিরা- উপশিরায় ও রক্তে মিশে দেহকে সবল, সতেজ ও কর্মক্ষম করে। শারীরিক অবকাঠামো গড়ে তোলে এবং বৃদ্ধি ঘটায়। অর্থাৎ খাদ্য গ্রহণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রি মানব শরীর বর্ধন ও সংরক্ষণে সহায়তা করে। আল্লাহ তাআলা এ নিখিল বিশ্বে আমাদের জাবিকার জন্য সবরকম আয়োজন করেছেন। আমাদের দেহ গঠন ও পরিপুষ্টির জন্য যা প্রয়োজন তা আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য পূর্বেই সৃষ্টি করেছেন এবং তা হালাল ও বৈধ উপায়ে উৎপাদন ও উপার্জন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদেরকে বৈধ জিনিষ গ্রহণ করার জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। মহান আল্লাহর নির্দেশ-
"তোমাদেরকে আমি যে সব পবিত্র বস্তু দিয়েছি তা থেকে আহার করো।"
(সূরা আল-বাকারা: ১৭২)
আমাদের এ রিফ বা জীবিকা দু'রকমের। হালাল ও হারাম। হালাল বা বৈধ যিরক গ্রহণ করার অনুমতি রয়েছে। আর হারাম বা অবৈধ বস্তু গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। আবার দ্রব্যের মধ্যে কিছু আছে যা এমনিতেই আমাদের জন্য খাওয়া বা গ্রহণ করা অবৈধ ও হারাম। এ হারাম বস্তু খেয়ে আমাদের যে শরীর হবে, তা জাহান্নামের উপযুক্ত। কেননা, হারাম বস্তু ভক্ষণে যে শরীর পরিপুষ্ট হয়, তা আল্লাহর আনুগত্য ও দাসত্বের পরিবর্তে তার অবাধ্যতার দিকে মানুষকে ধাবিত করে। এজন্য আল্লাহ প্রকৃতগতভাবে যেগুলোকে যে হারাম ঘোষণা করেছেন তা ভক্ষণ করতেও নিষেধ করেছেন।
তাছাড়া আমাদের শরীরের গঠন-বর্ধন ও সংরক্ষণে অসুবিধা নেই কিন্তু তা বৈধ বা হালাল উপায়ে অর্জিত নয়, বরং হারাম উপায়ে উপার্জিত এরূপ খাদ্য-দ্রব্য দ্বারা যে শরীর গঠিত হবে, তা জান্নাতের উপযুক্ত নয় বলে ঘোষণা করেছেন। হারাম খাদ্য-দ্রব্য ভক্ষণ করে যে দেহ পরিপুষ্ট হবে- তা কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। কেননা, হারাম ভক্ষণকারীদের রক্ত, মাংস সবই হারামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। সে দেহ আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। এরূপ শরীর অপবিত্র। জাহান্নামই তার জন্য উপযুক্ত ঠিকানা।
বর্ণিত হাদীসে রাসুলুল্লাহ (সা) হারাম বস্তু ভক্ষণ করতে নিরুৎসাহিত করেছেন এবং এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে মানবজাতিকে সতর্ক করে দিয়েছেন।
অন্য হাদীসে রাসূল (সা) হারাম বস্তু ভক্ষণ ও উপার্জন নিষিদ্ধ করে বলেছেন, হালাল খাদ্য ভক্ষণ শরীর সংরক্ষণে সহায়তা করে, মানব চরিত্রকে পবিত্র রাখে এবং সৎ ও পুণ্যময় পথে চলতে উৎসাহিত করে। কুরআন ও হাদীসে হারাম উপার্জনকে ইহকালে অশান্তি ও পরকালে শান্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হালাল সম্পদ উপার্জন ও হালাল খাদ্য ভক্ষণ ব্যতীত পরকালীন মুক্তি অসম্ভব। কেননা হালাল ভক্ষণকারীর মনোবল দৃঢ় থাকে, সে সদা সত্য কথা বলে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, সকল প্রকার অন্যায় ও অশ্লীলতাকে পরিহার করে পুত- পবিত্র জীবনযাপনে সচেষ্ট থাকে এবং আল্লাহর নির্দেশ পালনের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। ফলে সে পরকালে জান্নাত লাভ করার আশা করতে পারে। অপরদিকে হারাম খাদ্যদ্রব্য শরীর বর্ধন ও সংরক্ষণে সহায়তা করলেও আখিরাতে এর পরিণাম ভয়াবহ। হারাম ভক্ষণকারীর রক্তমাংস সবই হারামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তাই সে দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। যে ব্যক্তির আয় হারাম, তার সন্তানের শরীর বর্ধিত হয় হারাম দ্বারা এবং তার নিজের ও স্ত্রীর শরীর গড়ে ওঠে হারাম দ্বারা। এরূপ হারাম দ্বারা গঠিত শরীর কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে না। তাই রাসূল (সা) হারাম উপার্জন ও ভক্ষণ কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। এমনকি উপার্জনকারীর ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদেরও তা ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন। যারা হারাম খাদ্য ভক্ষণ করে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়েছে, জাহান্নামই তাদের উপযুক্ত স্থান। সেখানে তাদের বেদনাদায়ক শাস্তি ভোগ করতে হবে।
ব্যাখ্যা
উপরোক্ত হাদীস থেকে আমরা এ শিক্ষা লাভ করি যে-
- হালাল উপার্জন করে হালাল রিযুক খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে।
- হারামের দ্বারা গঠিত শরীর কখনও বেহেশতে প্রবেশ করবে না।
- হারামের দ্বারা গঠিত শরীর জাহান্নামেরই উপযুক্ত। জাহান্নামের আগুনে তা দগ্ধ হবে।
- হারাম উপায়ে উপার্জিত খাদ্য দ্বারা স্ত্রী-পুত্র-কন্যা ও পরিজনের শরীর গঠিত হলে তাও জাহান্নামের ইন্ধন হবে।
- হারাম উপার্জন ত্যাগ করার এবং জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
- হারাম থেকে বেঁচে না থাকলে কেউই জান্নাতে যেতে পারবে না। জাহান্নামই হারাম শরীরের ঠিকানা হবে।
হযরত মিকদাম ইবনে মাদীকারিব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: কেউ নিজ হাতের উপার্জন দ্বারা প্রাপ্ত খাদ্যের চেয়ে কোন উত্তম খাদ্য খেতে পারে না। নিশ্চয় আল্লাহর নবী হযরত দাউদ (আ) নিজ হাতে উপার্জিত খাদ্য দ্বারাই আহার করতেন। (বুখারী)
ব্যাখ্যা
আলোচ্য হাদীসটিতে শ্রমের মর্যাদার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কাজ করে খেতে কোন অপমান বা আপত্তি থাকতে পারে না। পেশা ক্ষুদ্র হোক-বৃহৎ হোক, তাতে কিছু আসে যায় না। নিজে পরিশ্রম করে শ্রমলদ্ধ অর্থে নিজের ও নিজের পরিবারবর্গের আহার যোগানোর জন্য সংগ্রাম করা অতিশয় সম্মান ও পুণ্যের কাজ। কোন পেশাকে হেয় মনে করা ঠিক নয়। এছাড়া অন্যের গলগ্রহ হয়ে থাকা অতিশয় নিন্দনীয় কাজ। শ্রমের মর্যাদার দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে মহানবী (সা) হযরত দাউদ (আ)-এর দৃষ্টান্ত দিয়েছেন। আল্লাহর কালামে পাকও এ বিষয়ে সাক্ষী। আল্লাহ পাক বলেন-
"আমি তাঁকে তোমাদের জন্য বর্ম নির্মাণ শিক্ষা দিয়েছিলাম।"
(সূরা আল-আম্বিয়া: ৮০)
যুদ্ধাস্ত্রগুলোর মধ্যে যেগুলো পরিধান করা হত বা গলায় লাগিয়ে ব্যবহার করা হত সেগুলোকে لبوس বলা হয়েছে।
এখানে لبوس বলতে লৌহবর্ম বোঝানো হয়েছে, যা যুদ্ধে শত্রু থেকে আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার করা হত।
আলোচা আয়াতে বর্মনির্মাণ শিল্প শিক্ষাদানের সাথে এর উদ্দেশ্যও বলে দেয়া হয়েছে যে. لتحصينكم من بأسكم বর্ম তোমাদেরকে যুদ্ধে সুতীক্ষ্ণ তরবারির আঘাত থেকে রক্ষা করবে। এ শিল্প শিক্ষাকে আল্লাহ তাআলা একটি নিয়ামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এজন্য শুকর আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যে শিল্পের মাধ্যমে মানুষের প্রয়োজন মেটান যায়, তা শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়া অতি পুণ্যের কাজ, যদি তাতে মানব জাতির খিদমাতর নিয়াত থাকে। আল্লাহর নবীগণ কোন না কোন শিল্পকর্মে নিয়োজিত ছিলেন। হযরত দাউদ (আ.) সর্যশিল্পে নিয়োজিত ছিলেন বলে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি (সম্ভবত প্রথম জীবনে) চাষী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি শস্য বপন ও কর্তন করতেন। মহানবী (সা) বলেছেন- যে বাক্তি মানুষের খিদমতের জন্য কোন কাজ করে তাঁর দৃষ্টান্ত মূসা (আ)-এর জননীর ন্যায়। তিনি নিজের সন্তানকেই দুধ পান করিয়েছেন, আবার ফিরআউনের কাজ থেকে পারিশ্রমিক পেয়েছেন।
হারাম উপার্জন থেকে দান করা
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা) সূত্রে বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন। কোন বান্দা হারাম সম্পদ উপার্জন করে তা থেকে দান করলে তা কবুল হবে না। তা নিজ কাজে খরচ করলে তাতে বরকত হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা মন্দকে দিয়ে মন্দ দূর করেন না। তিনি মন্দকে উত্তম দ্বারা দূর করেন। নিশ্চয় খারাপ জিনিস খারাপ জিনিসকে দূর করতে পারে না। (মুসনাদে আহমদ)
এ প্রসঙ্গে হযরত হাসান বিন আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ (সা) থেকে এ কথা মুখস্ত করে রেখেছি- যা তোমার মনে খটকা লাগে তা ছেড়ে দিয়ে যাতে খটকা লাগে না তা গ্রহণ কর। সত্য শান্তি আনে। নিশ্চয়ই মিথ্যাই খটকা সৃষ্টি করে। (আহমদ,তিরমিযী, নাসাঈ ও দারিমী বর্ণনা করেছেন।)
আলোচ্য হাদীসটি মিশকাতুল মাসাবীহ-এর 'কিতাবুল বুয়ু' পর্বের হালাল উপার্জন ও হালাল জীবিকা অনুসন্ধান অধ্যায় থেকে নেয়া হয়েছে- যা আহমাদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও দারেমী থেকে সংকলিত।
মহান রাব্বুল আলামীন মানুষকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে সৃজন করেছেন এবং সম্মানজনকভাবে চলার জন্য অনেক বস্তু- সামগ্রী সৃষ্টি করেছেন। যেগুলো তারা ভোগ-ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু সব বস্তু ভোগ- ব্যবহারের অনুমতি আল্লাহ তাদের দেননি। কিছু বৈধ কিছু অবৈধ করেছেন। জাহিলী যুগে মানুষ বৈধ-অবৈধ যাচাই করত না। ইসলাম এসে সবগুলোর একটা সীমা নির্ধারণ করে দেয়। তবে ইসলাম কোন কোন ক্ষেত্রে বৈধ-অবৈধের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট মতামত দেয়নি। বরং অবস্থা অনুযায়ী পথ দেখিয়েছে মাত্র বা মৌলনীতি বর্ণনা করেছে তার আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এ কারণে বলা হয়েছে, যে সকল বস্তু মনে খটকা সৃষ্টি করে বা সন্দেহযুক্ত তা পরিত্যাগ করার জন্য। আবার যেগুলো সন্দেহমুক্ত এবং খটকা সৃষ্টি করে না, সেগুলো গ্রহণ করার জন্য। আর যেগুলো ইসলামের মৌল বিষয়ের সাথে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে সেগুলো ত্যাগ করা আবশ্যক। এ পথই শান্তির পথ যা মনে প্রশান্তি এনে দেয়। বিপরীত পথ মিথ্যার পথ যা মনে অশান্তির সৃষ্টি করে। মনকে পবিত্র ও প্রশান্ত রাখা মু'মিন মাত্রই কর্তব্য।
আর মিথ্যার পথ পরিহার করা হারাম বস্তু বর্জন ব্যতীত সম্ভব নয়। মনকে শান্ত ও পবিত্র রাখতে হলে হারাম উপার্জন পরিহার এবং হালাল উপার্জন এবং তা গ্রহণ বাঞ্ছনীয়।
অপরের অধিকার হরণ
যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ ভূমি অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করবে কিয়ামত দিবসে তার গলদেশে সাত স্তর জমি লটকিয়ে দেয়া হবে।
হাদীসটি দ্বারা অপরের অধিকার হরণ, অন্যায়ভাবে অন্যের জমি-জমাসহ অন্যান্য সম্পদ আত্মসাৎ করার ভয়াবহ পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা জানি, সামাজিক অপরাধ প্রবণতার মধ্যে অন্যায় উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে অপরের অধিকার হরণ, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই অন্যতম। এগুলো বিস্তার লাভ করলে সমাজ-সভ্যতা ও শান্তি-শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়ে। সমাজ হয়ে পড়ে জাহান্নামের অগ্নিকুণ্ড তুল্য। এসব অপরাধের কুফলগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল-
সমাজে পরস্পরের প্রতি পরস্পরের যে অধিকার ও কর্তব্য আছে, এসব কর্তব্য পালন করাই হল হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার অধিকার। আল্লাহর হক আদায় করতে কোন এট্টটি হলে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন। কিন্তু বান্দার হক নষ্ট করলে বা অপরের অধিকার হরণ করলে আল্লাহ তাআলা তা কখনো ক্ষমা করবেন না। অধিকার শব্দটি বেশ ব্যাপক অর্থবোধক। জান, মাল এবং সম্মানের অধিকার, ভাল ব্যবহার এবং সদয় আচরণ পাওয়ার অধিকার সকল বিষয় এর অর্ন্তভুক্ত। বিদায় হজ্জের ভাষণে মহানবী (সা) বলেছেন- "হে মানব মন্ডলী। তোমাদের রক্ত, বিত্ত-সম্পদ ও ইজ্জত পরস্পরের জন্য চিরস্থায়ীভাবে হারাম করা হল। এ সকল বিষয়ের গুরুত্ব ঠিক তোমাদের আজকের এই দিনটি, এই পবিত্র মাসটি বিশেষভবে এই শহরে অবস্থানকালে যেভাবে পালিত হয়ে থাকে।" কাজেই উপার্জনের ক্ষেত্রে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, সুদ, ঘুষ প্রভৃতি হারাম পন্থা পরিহার করতে হবে। এ প্রসঙ্গে রাসূল (সা) বলেছেন- "যে ব্যক্তি আদায় করার নিয়াতে মানুষের সম্পত্তি ধার নেয়, আল্লাহ তাকে ফেরত দেয়ার সঙ্গতি দান করেন এবং যে আদায় না করার নিয়াতে ধার নেয়, আল্লাহ তাকে ধ্বংস করে দেন।" (বুখারী) অপর একটি হাদীসে আছে মহানবী (সা) বলেছেন- "যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারও যমীন হরণ করে, কিয়ামতের দিন ঐ জমির মাটি হাশরের ময়দানে জমা করার আদেশ দিবেন। (আহমাদ, তাবারানী) আমাদের কাছে অনেকের অধিকার আছে- সেসব অধিকার যথাযথভাবে আদায় করা কর্তব্য। অধিকার আদায়ে অবহেলা করা মারাত্মক অপরাধ। আমরা অনেক সময় বোনদের প্রাপ্য উত্তরাধিকার স্বত্ত্ব দেই না, এটিও অধিকার হরণের অন্তর্ভুক্ত এবং হারাম উপার্জন হিসেবে ঘৃণিত। কেননা, আল্লাহ তাআলা ছেলের ন্যায় মেয়েকেও পিতৃ সম্পদের অধিকারী করেছেন এবং তার জন্য অংশ নির্ধারণ করেছেন। যদি কেউ মেয়েদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে সে অংশ নিজে ভোগ করে তবে তা হারাম উপার্জনের অন্তর্ভুক্ত হবে। ঐ ব্যক্তি আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করবে এবং পরকালে জাহান্নামী হবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url