আইন কি এর বৈশিষ্ট্যগুলো শ্রেণীবিভাগ উৎসসমূহ এবং জনসাধারণ আইন মান্য করে কেন- তার ব্যাখ্যা

আইনের সংজ্ঞা দিতে পারবেন এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করতে পারবেন, আইনের শ্রেণীবিভাগ করতে পারবেন আইনের উৎসসমূহ চিহ্নিত করতে পারবেন, এবং জনসাধারণ আইন মান্য করে কেন- তা' ব্যাখ্যা করতে পারবেন।





আইন কি

আইন ফার্সি শব্দ। ইংরেজি Law শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ আইন। ইংরেজি Law শব্দটি টিউটনিক মূলশব্দ- Lag থেকে এসেছে। Lag শব্দের অর্থ স্থির বা অপরিবর্তনীয়। সুতরাং শাব্দিক অর্থে আইন বলতে কতিপয় নির্দিষ্ট অপরিবর্তনীয় নিয়মাবলীর সমষ্টিকে বুঝায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আইন শব্দটি একটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। রাষ্ট্রের অনুশাসনকে আইন বলে।

যে সকল বিধিনিষেধ রাষ্ট্রকর্তৃক স্বীকৃত ও যেগুলো ভঙ্গ করলে শাস্তি ভোগ করতে হয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানেরসংজ্ঞানুযায়ী সেগুলোকেই আইন বলে। 

বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আইনের বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। এরিস্টটলের (Aristotle) মতে, "সমাজের যুক্তিসিদ্ধ ইচ্ছার অভিব্যক্তিই হল আইন।" বিশ্লেষণপন্থী জন অস্টিনের (Austin) মতে, "আইন হল নিম্নতনের প্রতি ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের আদেশ।" অধ্যাপক হেনরী মেইনের (Henry Maine) মতে, পরিবর্তনশীল, ক্রমোন্নতিমূলক, ক্রমবর্ধমান ও দীর্ঘকালীন সামাজিক প্রথার গতির ফলকে আইন বলা হয়।" অধ্যাপক হল্যান্ডের (Holland) মতে, "আইন হল মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের এমন কতকগুলো সাধারণ নিয়ম যা সার্বভৌম শক্তি কর্তৃক প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।" আইনের সর্বাপেক্ষা সুন্দর, সর্বজনগ্রাহ্য ও চমৎকার সংজ্ঞা প্রদান করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন (Wilson)। তাঁর মতে, "আইন হল মানুষের স্থায়ী আচার-আচরণ ও চিন্তাধারার সেই অংশ যা' রাষ্ট্রের দ্বারা স্বীকৃত বিধিতে পরিণত হয়েছে এবং যার পশ্চাতে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের সুস্পষ্ট সমর্থন রয়েছে।"

উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায় যে, আইন হল রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত ও সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত জনসাধারণের সামগ্রিক কল্যাণের জন্যে অত্যাবশ্যক কতকগুলো বিধি-বিধানের সমষ্টি যা' রাষ্ট্রের সকলের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে।

আরো পড়ুন: বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত শরীয়াতের পরিভাষা ও বিধান

আইনের বৈশিষ্ট্য

আইনের উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলো বিশ্লেষণ করলে আমরা আইনের কতকগুলো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করি।আইনের এ বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে।

১. আইন হচ্ছে মানুষের আচার-আচরণ সম্পর্কিত বিধান

২ আইন শুধু মানুষের বাহ্যিক আচরণকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে

৩. সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ হিসেবে সরকার আইন জারি করে থাকে

৪ আইন জারির প্রাথমিক উদ্যোগ সরকার স্বয়ং কিংবা সাধারণ জনগণও নিতে পারে

৫. আইন অবশ্য পালনীয়। আইন ভংগ বা অমান্য করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আইনের শ্রেণীবিভাগ

অধ্যাপক হল্যান্ড (Holland) আইনকে দু'ভাগে বিভক্ত করেছেন ব্যক্তিগত আইন (Private Law) এবং সরকারি আইন (Public Law)। তাঁর মতে, ব্যক্তিগত আইনে উভয় পক্ষই সাধারণ ব্যক্তি। কিন্তু সরকারি আইনে অন্ততপক্ষে এক পক্ষ সরকার এবং অন্য পক্ষ সাধারণ ব্যক্তি।

তিনি সরকারি আইনকেও কয়েক শ্রেণীতে বিভক্ত করেন। প্রথমত, শাসনতান্ত্রিক আইন বা সাংবিধানিক আইন (Constitutional Law) দ্বিতীয়ত, শাসন বিভাগীয় আইন (Administrative Law) তৃতীয়ত, ফৌজদারি আইন (Criminal Law) চতুর্থত, ফৌজদারি আইন সংক্রান্ত বিধি (Criminal Procedure) কৌমারীর সাথে আইন, যা' রাষ্ট্রকে আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিচার করে (Law of the State in its quasi-private personality) এবং ষষ্ঠত, রাষ্ট্রীয় আইন সংক্রান্ত বিধি (Procedure of Law of the Slute) আবার উৎপত্তির কেন্দ্রস্থল হতে বিচার করা হলে একে আমরা নিন্মোক্ত ছয় ভাগে ভাগ করে আলেচনা করতে পারি।

শাসনতান্ত্রিক আইন (Constitutional Law): একে মৌলিক আইনও বলা হয়। রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা কিভাবে কোথায় অবস্থিত থাকে, দেশের শাসনব্যবস্থা কিভাবে চলবে তা শাসনতান্ত্রিক আইন নিরূপন করে। আইন পরিষদ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন সীমা কতদূর, সাধারণ আইন কিভাবে প্রণীত হয়, তা' নির্ধারণ করে এ শাসনতান্ত্রিক আইন। এ আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে এর পরিবর্তন ও পরিবর্ধন অত্যন্ত সাবধানতার সাথে জটিল প্রণালীতে সাধন করা হয়।

সাধারণভাবে প্রণীত আইন (Statute): এটি আইন পরিষদ কর্তৃক সাধারণভাবে প্রণীত আইন। সাধারণভাবে দৈনন্দিন সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য আইন পরিষদ এ সকল আইন প্রণয়ন করে থাকে।

সাধারণ আইন (Common Law): এটা প্রথাভিত্তিক সাধারণ নিয়মাবলী। এটি বিভিন্ন বিচারালয়ে স্বীকৃত এবং অনুমোদিত। ন্যায়ানুগ মনোভাব এবং উপযোগিতাভিত্তিক এ সাধারণ নিয়মাবলী সামাজিক জীবনে অত্যন্ত মূল্যবান। ইংল্যান্ডে সাধারণ আইনসমূহ (Common Law) বিচারালয়ের সিদ্ধান্ত হতে গৃহীত হয়েছে।

বিভাগীয় কর্তাদের আইন (Ordinance): এ আইন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। বিশেষ পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্যে শাসন বিভাগীয় কর্মকর্তারা মাঝে মাঝে নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে এটি আইনের মর্যাদা লাভ করেছে।

শাসন বিভাগীয় আইন (Administrative Law): সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কার্য পরিচালনার জন্য খুঁটিনাটি নিয়ম-কানুনসমূহ শাসন বিভাগীয় আইন। রাষ্ট্রের কর্মক্ষেত্রে প্রসারিত হবার সাথে সাথে এ সকল নিয়ম-কানুনের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাচ্ছে। আইন পরিষদের এমন সময় বা সামর্থ্য নেই যে, তারা এসব বিষয়ে যথাযথ মনোনিবেশ করতে পারে। ফলে আইন পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত কাঠামোকে ঠিক রেখে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ ছোটখাট নিয়ম-কানুন তৈরি করেন।

আন্তর্জাতিক আইন (International Law): আন্তর্জাতিক আইন এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য রাষ্ট্র কিরূপ আচরণ করবে তা' নির্ধারণ করে।

আরো পড়ুন: জাতি কি জাতীয়তার সংজ্ঞা ও উপাদান সমূহ 

আইনের উৎসসমূহ

আমরা জানি যে, আইন হল রাষ্ট্রের মত বহু বিবর্তনের ফল। আইনের বিভিন্ন উৎস রয়েছে। অধ্যাপক হল্যান্ড আইনের ছয়টি উৎসের কথা উল্লেখ করেছেন। নিচের আলোচনা থেকে আমরা তা' জানব।

প্রচলিত প্রথা (Customs): সকল দেশেই আইনের অন্যতম উৎস হচ্ছে সামাজিক রীতি-নীতি বা প্রচলিত প্রথা। রাষ্ট্র সৃষ্টির পূর্বে মানুষের জীবনযাত্রা সামাজিক প্রথার দ্বারা পরিচালিত হত। সামাজিক প্রথা রাষ্ট্রের স্বীকৃতি লাভ করে আইনে পরিণত হয়। বিভিন্ন দেশে কতিপয় প্রথাগত বিধান আইনের সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্র কর্তৃক প্রণীত বিভিন্ন আইনের পরিপূরক হিসেবে প্রথাগত বিধানগুলোও আইনের মর্যাদা লাভ করে। ইংল্যান্ডের সাধারণ আইনগুলোও প্রচলিত-প্রথার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

 ধর্ম (Religion): আদি যুগে ধর্ম থেকেই অনেক আইনের সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মীয় অনুশাসনও অনেক ক্ষেত্রে আইনের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ নিজ আচরণ মেনে চলে। ধর্মের বিধি-বিধান রাষ্ট্রের সমর্থন লাভ করে আইনে পরিণত হতে পারে। হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের বহু প্রকার আইনের উৎস হচ্ছে ধর্ম। তাই বলা যায়, ধর্ম আইনের আরেকটি উৎস।

বিজ্ঞানসম্মত ভাষ্য (Scientific Commentary): বিশিষ্ট আইনবিদদের বিজ্ঞানসম্মত পর্যালোচনাও আইনের অন্যতম উৎস। তাদের মতবাদ যুক্তি হিসেবে গ্রহণ করা হয়, সিদ্ধান্ত হিসেবে নয়। বিজ্ঞানসম্মত আলোচনার স্বীকৃতিস্বরূপ একে বিচারকদের সিদ্ধান্ত বলেই গণ্য করা হয়।

বিচারকের রায় (Adjudication): বিচার করতে গিয়ে অনেক সময় বিচারকগণ সমস্যায় পড়েন। কারণ প্রচলিত আইনকে হয়ত কোন কারণে ব্যবহার করা সম্ভবপর হয় না। তখন তারা নিজস্ব বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন আইন তৈরি করেন এবং বিচারের রায় দেন। ফলে নতুন আইন তৈরি হয়। পরবর্তীতে বিচারকগণ এ সকল নতুন আইন অনুসরণ করেন। 

ন্যায়বোধ (Equity): আইনের আর একটি উৎস হচ্ছে বিচারকগণের ন্যায়বোধ। বিচারকগণের কাছে অনেক সময় এমন মামলা উপস্থিত হয় যা' প্রচলিত আইনের দ্বারা বিচার করা চলে না। এ সকল ক্ষেত্রে বিচারকগণ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ন্যায়বোধের দ্বারা বিচার করে থাকেন। তাদের ন্যায়বোধ হতে যে সকল সিদ্ধান্ত গড়ে উঠে তা' থেকে আইনের সৃষ্টি হয়ে থাকে।

আইন সভা (Legislature):  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ উৎস হল আইনসভা কর্তৃক আইন প্রণয়ন। বর্তমান বিশ্বে আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইন আইনের একটি বিরাট উৎস। আইনসভা পুরাতন আইনের সংশোধন করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন আইন প্রণয়ন করে।

জনমত (Public Opinion): আইনের উৎস হিসেবে জনমত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আইনসভার সদস্যগণ জনগণের প্রতিনিধি। জনমতের বাস্তব প্রতিফলন ঘটানো তাদের অন্যতম দায়িত্ব। কাজেই আইনসভায় যে কোন আইন প্রণয়নের সময় জনমতের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়। আইন বিশারদ ওপেনহেইম বলেন, "জনমত আইনের অন্যতম উৎস।

নির্বাহী ঘোষণা ও ডিক্রী (Declaration of the Executive and Decree): বর্তমান যুগে বিভিন্ন কারণে আইনসভা তার কর্তৃত্বকে শাসন বিভাগের মাধ্যমেও পরিচালিত করে। এ অবস্থায় শাসন বিভাগের জারিকৃত ঘোষণা ও আদেশগুলোও আইনে পরিণত হয়। তাই বলা যায় যে, প্রশাসনিক আইনের উৎস নির্বাহী ঘোষণা ও ডিক্রী।

সংবিধান (Constitution): সংবিধান আইনের সবচেয়ে বড় উৎস। সংবিধান একটি বিশেষ দলিল। আইনসভা ও অন্যান্য সরকারি বিভাগের ক্ষমতা সীমিত ও তাদের কার্যরীতি প্রতিষ্ঠার জন্যে সংবিধান তৈরি করা হয়। সংবিধানে বিভিন্ন ধরনের বিধানাবলী লিপিবদ্ধ থাকে যেগুলো আইনসভা এবং সরকারের পথ-প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে।

আরো পড়ুন: সামাজিক অনাচার প্রতিরোধে আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা

 জনসাধারণ আইন মান্য করে কেন

নিম্নলিখিত কারণে জনসাধারণ আইন মেনে চলে। 

ধর্মীয় কারণে: ধর্মীয় কারণে জনসাধারণ আইন মান্য করে। মধ্যযুগে আইন ধর্মের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। তখন আইন অমান্য করা পাপ বলে বিবেচিত হত। পাপের ভয়ে জনসাধারণ আইন মেনে চলত।

 সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে: সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তার কারণে জনসাধারণ আইন মান্য করে চলে। আইন মান্য করে চললে রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং জনসাধারণ সুখ-শান্তি ও নিরাপদে বসবাস করতে পারে।

শাস্তির ভয়: শাস্তির ভয়ে জনসাধারণ আইন মান্য করে চলে। আইন ভঙ্গ করা শাস্তিমূলক অপরাধ। আইন অমান্য করলে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত শাস্তি পেতে হয় এবং সমাজ কর্তৃক নিন্দিত হতে হয়। 

 ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য: ন্যায় প্রতিষ্ঠার তাগিদে জনসাধারণ আইন মান্য করে চলে। আইন দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করে। আইন না থাকলে অনিয়মে দেশ ছেয়ে যেত এবং মানব সভ্যতা বিলুপ্ত হত। 

মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য প্রত্যেক রাষ্ট্রেই জনসাধারণের মৌলিক অধিকার রয়েছে।আইন না থাকলে এ সকল মৌলিক অধিকার ভোগ করা সম্ভব নয়। মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ ও ভোগের জন্যে জনসাধারণ আইন মান্য করে চলে। 

মনুষ্যত্ব ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্যে: মনুষ্যত্ব ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্যে জনসাধারণ আইন মান্য করে চলে। সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তার অভাব হলে জনসাধারণ মানবিক গুণাবলী ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের সুযোগ পায় না। ফলে সভ্যতা, সমৃদ্ধি ও উন্নতি ব্যাহত হয়।

উপযোগিতা উপলব্ধি: আইনের উপযোগিতাও জনসাধারণের আইন মানতে অনুপ্রাণিত করে। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে বাস করতে হলে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। এটি জনসাধারণ উপলব্ধি করে বলেই তারা আইন মেনে চলে।

লর্ড ব্রাইসের (Lord Bryce) মতে, জনসাধারণ পাঁচটি কারণে আইন মেনে চলে। 

যথা- ১ আলস্য ২. অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ৩. শাস্তির ভয়, ৪. সহানুভূতি ও ৫. বিচার-বুদ্ধি। যে দেশ যত বেশি উন্নত ও শিক্ষিত সে দেশের জনসাধারণ তত বেশি আইন মেনে চলে।

সারকথা

মানুষ সামাজিক জীব। মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সমাজে আইনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। যদি কোন আইন মানুষের অভ্যন্তরীণ কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করে তাহলে সে আইনকে বলা হয় নৈতিক আইন। আর যদি মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ে আলোচনা করে তবে তাকে বলা হয় সামাজিক বা রাজনৈতিক আইন। সমাজ জীবনে মানুষ সামাজিক ও রাজনৈতিক আইন মেনে চলে। আইন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে সুসংহত করে এবং সুন্দর ও সুশৃঙ্খল জীবন যাপনের সুযোগ দান করে। আইন সার্বজনীন ও সর্বজন গ্রাহ্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url