আখ চাষ পদ্ধতি ও আখের রস খাওয়ার উপকারিতা

আখ (Sugarcane) একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় উদ্ভিদ, যার স্টেম থেকে চিনির উৎপাদন করা হয়। এটি প্রধানত গরম, আর্দ্র অঞ্চলে ভালো জন্মায় এবং বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশে এর চাষ করা হয়। আখের রস সাধারণত পানীয় হিসেবে খাওয়া হয়, আবার এর থেকে বিভিন্ন ধরনের চিনি, গুড় এবং মেলাসেসও তৈরি হয়। আখের রস খাওয়া সাধারণত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর, এবং এটি শরীরকে শক্তি দেয়।


ভূমিকা

চিনির উৎস: আখের রস থেকে চিনি উৎপাদিত হয় যা খাবারের মধ্যে মিষ্টতা আনে।

পুষ্টিগুণ: আখের রসে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিনসমূহ রয়েছে।

হজমের সাহায্য: আখের রস হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সহায়ক।

কিডনির স্বাস্থ্যে উপকারী: আখের রস কিডনি স্টোন প্রতিরোধে সহায়ক বলে বিশ্বাস করা হয়।

এছাড়া আখের গাছের অন্যান্য অংশও বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন আখের বাকল বা খোল থেকে জ্বালানি তৈরী করা যায়।

আপনি যদি আখ সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চান, জানাবেন!

আরো পড়ুন: করলা চাষ পদ্ধতি ও করলা খাওয়ার উপকারিতা 

আখ চাষ পদ্ধতি

আখ চাষের পদ্ধতি কিছু নির্দিষ্ট ধাপে বিভক্ত। এখানে মূল পদ্ধতিগুলো:

স্থান নির্বাচন: উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু সহ ৪-৫ ঘণ্টা রোদ পেতে সক্ষম মাটি নির্বাচন করুন। খরা ও জলাবদ্ধতা সহ্য করার ক্ষমতা থাকা উচিত।

মাটি প্রস্তুতি: মাটি গভীর ও খোলামেলা হওয়া উচিত, যাতে জল নির্গত হতে পারে। জমি ভালোভাবে চাষ করে, ১৫-২০ সেন্টিমিটার গভীরতার মধ্যে সেচের জন্য খাল তৈরি করুন।

বীজ বপন: আখের বীজ সাধারণত কাটার মাধ্যমে (৩-৪ চোখসহ) বপন করা হয়। এগুলো জমিতে সোজা বা হালকা কোণে পুঁতে দেওয়া হয়।

জলসেচ: প্রথম ৩-৪ মাস নিয়মিত সেচের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তবে অতিরিক্ত জল জমা থেকে বিরত থাকতে হবে।

সার প্রয়োগ: আখের জন্য অধিক পুষ্টি প্রয়োজন, তাই খাদ্য উপাদান হিসেবে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, এবং জৈব সার ব্যবহার করা হয়।

আগাছা ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার এবং পোকামাকড় প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।

কাটা ও সংগ্রহ: ১০-১২ মাস পর আখ পরিপক্ক হয়ে ওঠে। গাছগুলো কেটে ছোট করে সংগ্রহ করা হয়।

আখ চাষের সময়সীমা, পরিচর্যা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর ভিত্তি করে ফলন পরিবর্তিত হতে পারে। আপনি কি বিশেষ কোন এলাকার জন্য এই পদ্ধতি জানতে চান?

আরো পড়ুন: আঙ্গুর চাষ পদ্ধতি ও  আঙ্গুর খাওয়ার উপকারিতা

আখের রস খাওয়ার উপকারিতা

আখের রস পুষ্টিকর এবং শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এর কিছু প্রধান উপকারিতা হলো:

শক্তি বৃদ্ধি: আখের রসে প্রাকৃতিক সুগার রয়েছে যা দ্রুত শক্তি প্রদান করে।

পাচনতন্ত্রের উন্নতি: আখের রস হজমের জন্য উপকারী, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

ডিটক্সিফিকেশন: এটি শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত করে।

ত্বকের জন্য উপকারী: আখের রসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ত্বককে উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখে।

হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য: আখের রস কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

তাপমাত্রা কমানো: গরমের দিনে আখের রস শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

এছাড়া, এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে এবং শরীরে পটাসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url