খোলাফায়ে রাশেদীন ও খিলাফতের ব্যাখ্যা
খোলাফায়ে রাশেদীন ও খিলাফতের ব্যাখ্যা করতে পারবেন, ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ বর্ণনা করতে পারবেন, খলিফাদের নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে বলতে পারবেন, খলিফাদের রাষ্ট্রদর্শন আলোচনা করতে পারবেন, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কি তা ব্যাখ্যা করতে পারবেন।
হযরত মুহাম্মদ (স:) এর মৃত্যুর পর যে চারজন সাহাবী তাঁর প্রতিনিধিরূপে আরব রাষ্ট্র ও মুসলিম জাহানের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁরাই ইতিহাসে খোলাফায়ে রাশেদীন বা সত্য ও ন্যায় পথগামী নামে পরিচিত। হযরত মুহাম্মদ (স:) এর নির্দেশিত পথে যে বিশিষ্ট চারজন সাহাবী নিজেদের জীবন ও রাষ্ট্রের কার্যাদি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত করেছেন তাঁরা হলেন-
• হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রা:)
• হযরত উমর ফারুক (রা:)
• হযরত ওসমান গনি (রা:)
• হযরত আলী (রা:)
খিলাফত হচ্ছে ইসলামের ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যে কোন পদ্ধতি থেকে এটি এক ভিন্নধরনের সরকার পদ্ধতি। প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ও দার্শনিক ইবনে খালদুনের মতে খিলাফত হচ্ছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর মিশনের প্রতিনিধিত্ব করে। তিনি আরও বলেন যে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর মৃত্যুর পরে যাঁরা তাঁর আদর্শ প্রচারণার দায়িত্ব পালন করেন তাঁদেরকে খলিফা বলা হয়। সুতরাং খলিফা হচ্ছেন মহানবীর প্রতিনিধি। তাঁরা একাধারে ছিলেন রাষ্ট্রের নেতা অন্য দিকে ইমাম। তাঁরা তিরিশ বছর কাল মুসলিম জাহানের খেলাফতের পদ অলংকৃত করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক পি.কে হিট্রি বলেন," এটি এমন একটি যুগ ছিল, যে যুগ হযরত মুহাম্মদ (স:)-এর জীবনাদর্শ, খলিফাদের চিন্তাধারা ও কর্মের উপর জ্যেতির্ময় আলোকছটার প্রভাব বিস্তার করা থেকে বিরত হয়নি।" মজিদ খাদ্দুরীর ভাষায় খিলাফত ছিল ধর্মীয় ভিত্তিতে রাষ্ট্রের পার্থিব শাসন কাঠামো। ইসলামী জীবন ব্যবস্থার পরিপূর্ণ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন হয়েছিল খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে। তাঁরা হযরত মুহাম্মদ (স:) প্রতিনিধি হিসেবে পৃথিবীতে ইসলাম ধর্মকে মজবুত করেছিলেন। তাঁরা ছিলেন সর্বগুণে গুণান্বিত। তাঁদের শাসন ছিল ন্যায় ও ইনসাফে পরিপূর্ণ। হযরত মুহাম্মদ (স:) মদীনায় যে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগে উক্ত রাষ্ট্র পূর্ণতা লাভ করে। হযরত মুহাম্মদ (স:) এর জীবদ্দশায় বিভিন্ন কারণে নব প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র সুসংহতকরণ সম্ভবপর হয় নি। তাঁর মৃত্যুর পরে খোলাফায়ে রাশেদীনের শাসনামলে রাষ্ট্রের ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হয়।
নির্বাচন পদ্ধতি
খিলাফত ছিল একধরনের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। খলিফাদের নির্বাচন এক প্রকারের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংঘটিত হয়েছিল। উত্তারাধিকার সূত্রে কেউ খলিফার পদ লাভ করে নি। খলিফা ■ নির্বাচনের দুটি পদ্ধতি লক্ষ্য করা যায়। খলিফা সরাসরি নির্বাচিত লোভ করে নি। খলিফা দ্বারা নির্বাচিত হতেন। খিলাফতের ইতিহাসে নির্বাচন ও মনোনয়ন উভয় পদ্ধতিই প্রচলিত
ছিল। নির্বাচকমন্ডলীর সদস্যগণ শিক্ষিত, ন্যায়পরায়ণ ও প্রভাবশালী ছিলেন। তাঁদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন খলিফা দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে পরবর্তী খলিফা নির্বাচনের জন্য 'আহল আল ইমামাহ বা একটি নির্বাচকমন্ডলী গঠন করতেন। গণতান্ত্রিক ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে হযরত মুহাম্মদ (স:) ইসলামী রাষ্ট্রের পরিচালনা এবং খলিফা নির্বাচনের দায়িত্বভার সমস্ত মুসলমানদের উপর ন্যস্ত করে গিয়েছিলেন। জনগণের রায় ব্যতীত কেউ খলিফা হতে পারতেন না।
ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ
খোলাফায়ে রাশেদীনের শাসনামলে আমরা ইসলামী রাষ্ট্রের নমুনা পাই। ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ ছিল নিম্নরূপ:
• আল্লাহ এর সার্বভৌমত্ব। কেবল আল্লাহর আইন বৈধ হবে,
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। খলিফা ও আমীরগণ বিচার বিভাগের অধীন ছিলেন;
ধনী-গরীব, ফকির-বাদশাহ আইনের চোখে সকল মানুষই সমান;
রাষ্ট্রের সকল মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে;
নাগরিকের মৌলিক অধিকার আইনের মাধ্যমে আদায় করার বিধান;
জাতীয় সম্পদের ন্যায়সংগত বন্টন;
• বায়তুলমাল সর্বসাধারণের, খলিফা শুধু রক্ষক মাত্র;
শাসক-শাসিতের মধ্যে সুস্পর্ক:
পরামর্শের ভিত্তিতে শাসন কার্যাদি পরিচালনা করা এবং জনসাধারণের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন।
রাষ্ট্রনীতি
রাজনীতির ক্ষেত্রে খলিফাদের আচরণ নিয়ন্ত্রিত হতো পবিত্র কোরআনের কালেমার রাজনৈতিক বিধি-বিধান ও আদর্শের দ্বারা। আইনের শাসন তাঁদের কঠোরভাবে মেনে চলতে হতো। জনস্বার্থ কিংবা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার কথা বলে তাঁরা আইনের শাসন থেকে অব্যাহতি পেতেন না। ইসলামী অনুশাসনের পরিমন্ডলে জনসাধারণ রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনার পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতেন। ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর ছিদ্দিক (রা:) নির্বাচিত হয়ে জনগণের কাছে বললেন, "আমি যতক্ষণ আল্লাহ ও রসুলের নির্দেশ মেনে চলবো ততক্ষণ আমি আপনাদের আনুগত্যের অধিকারী। আমি ঠিক পথে চললে আপনারা আমাকে অনুসরণ করবেন। আমি ভুল করলে আপনারা আমার ভুল সংশোধন করে দিবেন।" দ্বিতীয় খলিফা হয়রত উমর (রা:) ঘোষণা করেছিলেন, উম্মাহর সমর্থন না থাকা সত্ত্বেও যারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে এবং ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে তাঁদের এবং তাদের সমর্থকদের হত্যা করা উচিৎ। হযরত উমর (রা:) তাঁর খিলাফতকালে সাম্য ও স্বাধীনতার মহৎ আদর্শ স্থাপন করেছিলেন। সপ্তম শতাব্দীর ইসলামী রাষ্ট্র দরিদ্র ও বঞ্চিতদের সর্বপ্রকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। হযরত উমর (রা:) বলেছিলেন, যদি ফোরাত নদীর তীরে একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, বিচারের দিনে তার জন্য উমরকেই জবাবদিহি করতে হবে। খলিফাগণ রাতের অন্ধকারে খুঁজে বেড়াতেন কারা অভাব অনটনে আছে।
খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে উচ্চ ও নিম্ন কর্মচারীদের মধ্যে বেতনের আকাশ পাতাল তারতম্য ছিল না। ইসলামের স্বর্ণযুগে খলিফা এবং রাষ্ট্রের সর্বনিম্ন কর্মচারীদের জীবন মানের মধ্যে তেমন পার্থক্য ছিল না। সরল জীবন যাত্রা ও কৃচ্ছসাধণ ছিল তাঁদের জীবনের বৈশিষ্ট্য। জনসাধারণের অর্থে ধনী হওয়ার প্রবণতা তাঁদের ছিল না। খলিফাগণ অতি সাধারণ জীবন যাত্রার আদর্শ তুলে ধরেছিলেন। ইসলামী রাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক দিক হল যে, প্রশাসকদের জীবনযাত্রার মান কিছুতেই জনগণের জীবনযাত্রার মান থেকে উন্নত হবে না। জনগণ হল মনিব, আর শাসক হলো ভৃত্য। খলিফা উমর (রা:) জোতদারীর মূলে কুঠারাঘাত করেছিলেন। তাঁর খিলাফতকালে সাহাবীরা জমি কিনতে পারতেন না। খলিফাগণ বিশ্বাস করতেন যে, প্রত্যেক অভাবগ্রস্থ ভ্রাতা তাদের সম্পদের এক একজন অংশীদার। পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদের মালিক আল্লাহ। তাঁরা প্রতিবেশীর অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতেন এবং প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করার ব্যবস্থা করতেন। সমাজ থেকে অত্যাচার ও অনাচার নির্মূল করে সত্য ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা ছিল তাঁদের প্রধান কাজ।
ইসলামী রাষ্ট্রদর্শন মতে রাষ্ট্র, সরকার এবং ধর্ম আলাদা নয়, বরং একই সূত্রে আবদ্ধ। ইসলাম জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলতে বলে। যে বিধান জনগণের প্রতি সুবিচার করে না ইসলাম তা সমর্থন করে না। সপ্তম শতাব্দীর প্রথমভাগে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদীনায় এক সফল রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন। আল্লাহর সার্বভৌমত্বের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মানুষের সার্বিক কল্যাণ। উচ্ছেদ করা হয়েছিল বর্ণগত, গোত্রগত, জাতিগত ও অঞ্চলগত প্রভেদ। জনগণ দ্ব্যর্থহীনভাবে শাসন কর্তাদের সমালোচনা করতে পারতেন। খোলাফায়ে রাশেদীনের শাসন পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত ছিল। তাঁরা জনগণের ইচ্ছাকে সরকার ব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে কঠোর ভাবে মেনে চলতেন। উত্তরাধিকারসূত্রে ক্ষমতা গ্রহণের নীতি তারা অপছন্দ করতেন। বিশ্বাস করা হতো যে, প্রতিটি নাগরিকই আইনের চোখে সমান। কেউ শরীয়তের উর্দ্ধে নয়। ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান বলে মনে করা হয়। ইসলামী রাষ্ট্রদর্শন এক অনন্য বৈশিষ্ট্যে দেদীপ্যমান।
আল্লাহর সার্বভৌমত্ব
ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আল্লাহ্ তায়ালার সার্বভৌমত্ব হল কোরআন ও সুন্নাহর আইনের সার্বভৌমত্ব। আসমান, জমিন ও তার মধ্যস্থিত সবকিছুর স্রষ্টা ও মালিক আল্লাহ। খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্ব ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সর্বস্তরে সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। খলিফাগণের আয়ত্তাধীন ভৌগলিক সীমানার মধ্যে সার্বভৌমত্বের চূড়ান্ত ক্ষমতা কার্যকর হয়েছিল। তাঁরা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের আদেশ-নিষেধের রাজনৈতিক ক্ষমতা সকল বিচারলয়ের মাধ্যমে আইনসম্মত রূপদান করেছিলেন। আল্লাহর সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কাজ করলে বিধান মোতাবেক কঠোর শাস্তি দেওয়া হত। দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা:) এর পুত্রকেও এক্ষেত্রে অব্যাহতি দেওয়া হয় নি। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্বের মধ্যে সার্বজনীন গুণ বিদ্যমান যা পার্থিব ও পারলৌকি জীবনে এক অবিভাজ্য একত্বের সূচনা করে। ইসলাম ধর্ম মতে আরো মনে করা হয় যে, আল্লাহর সার্বভৌমত্বই কার্যকরভাবে ও দক্ষতার সাথে মানুষের অহমিকা ও ক্ষমতা লিলাকে প্রতিহত করতে পারে এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ অপসারিত করতে পারে। আল্লাহর অবিভাজ্য, সার্বজনীন সাবভৌমত্ব হযরত মুহাম্মদ (স:) ও তাঁর খলিফাগণ স্বার্থকভাবে প্রয়োগ করেছিলেন। তাঁরা সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের প্রতি আত্মসমর্থন করেছিলেন। খলিফা আল্লাহর আইনের বরখেলাপ করলে বিচারক তাঁকে পদচ্যুত, এমনকি মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত দিতে পারতেন।
আল্লাহর আইন মানুষের স্বাধীনতা, অধিকার ও নিরাপত্তা সংরক্ষণ করে। কারণ ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থে বা ইচ্ছায় কুরআন সুন্নাহর আইন রদ করার ক্ষমতা কারো নেই। ইসলামী মতে আরোও মনে করা হয় যে, জনগণের সার্বভৌমত্বে প্রচলিত মতবাদ ও নীতিতে বিরোধ ও সংঘর্ষ চলতে থাকে। অ-ইসলামিক রাষ্ট্রে শাসকশ্রেণী দল মত সকলের জন্য নয় বরং শ্রেণীর স্বার্থে আইন করে। নাগরিকদের মধ্যে সকলের সমান অধিকার না থাকার ফলে তাদের মধ্যে ভয়ভীতি, নিরাপত্তাহীনতা, অনিশ্চয়তা ইত্যাদি অশান্তি বিরাজ করে। বিশেষ গোত্র বা দলের জন্য বিশেষ সুবিধা মানুষের স্বাধীনতা ও ন্যায়সংগত অধিকারে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। মনে করা হয়, আল্লাহর এই সার্বভৌম চরম, সীমাহীন, স্থায়ী ও ব্যাপক ক্ষমতাসম্পন্ন।
এটিকে অন্যকোন আইন দ্বারা সীমাবদ্ধ বা বিভক্ত করা যায় না। সর্বশক্তিমান আল্লাহই হচ্ছেন একমাত্র আদেশ ও নিষেধ দাতা। খলিফা বা রাষ্ট্রপ্রধান এই সার্বভৌম ক্ষমতার দ্বারা সমাজ ও রাষ্ট্রের কাঠামোকে সুসংহত ও সুসংগঠিত করবেন।
সারকথা
খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগকে ইসলামের স্বর্ণযুগ বলা হয়। ইসলামে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় জীবন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইসলামী আদর্শে মনে করা হয় যে, ইসলাম হচ্ছে একটি ভারসাম্যপূর্ণ পরিপূর্ণ জীবন বিধান। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) ইসলামের মজবুত ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। খোলাফায়ে রাশেদীনের চারজন খলিফা সবাই তাঁদের জীবনকে ইসলামের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url