উমাইয়াদের কেন্দ্রীয় সরকার পদ্ধতি
উমাইয়াদের কেন্দ্রীয় সরকার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা পারবেন। উমাইয়া সরকারের বিভিন্ন বিভাগ বা দীওয়ান সম্পর্কে বর্ণনা করতে পারবেন।
ভূমিকা
উমাইয়া যুগের শাসনব্যবস্থা ছিল প্রকৃত আরবীয় শাসনব্যবস্থা। খলীফা প্রথম উমরের (রা) আমলে যে ইসলামি শাসন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হয় উমাইয়া যুগে নানা প্রকার সংস্কারের মাধ্যমে তা পূর্ণতা লাভ করে। আরব মুসলিমগণ শাসক শ্রেণী হিসেবে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করায় সে আমলে উমাইয়াদের কেন্দ্রীয় সরকার খুব শক্তিশালী ছিল এবং শাসিত জাতিসমূহ একটি পৃথক শ্রেণীতে পরিণত হয়েছিল। উমাইয়া যুগের সরকার পদ্ধতি দু'ভাগে বিভক্ত ছিল যথা- কেন্দ্রীয় সরকার পদ্ধতি ও প্রাদেশিক সরকার পদ্ধতি। নিম্নে উমাইয়া আমলের কেন্দ্রীয় সরকার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল-
কেন্দ্রীয় সরকার: উমাইয়াদের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান ছিলেন স্বয়ং খলীফা। খোলাফায়ে রাশেদূনের খলীফা থেকে উমাইয়া খলীফার বৈশিষ্ট্যে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। মুআবিয়া (রা) স্বীয় পুত্র ইয়াযীদকে নিজের উত্তরাধিকারী মনোনীত করে প্রকৃতপক্ষে রোমান ও সাসানীয় পদ্ধতির রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। প্রকৃতপক্ষে উমাইয়া শাসকগণ রাজা ছিলেন এবং জাঁকজমকপূর্ণ দরবারে বসে রাজকার্য সম্পাদন করতেন।
খলীফাগণ নিরংকুশ ক্ষমতার অধিকারী: উমাইয়া খলীফাগণ ছিলেন নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী। তাঁদের শাসনব্যবস্থা ছিল স্বৈরতান্ত্রিক। নীতি নির্ধারণে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাঁরা কারোও মুখাপেক্ষী ছিলেন না। খোলাফায়ে রাশেদূনের যুগে খলীফাগণ মজলিসে শূরার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অনেক বিষয় আলোচনা করতেন। কিন্তু মুআবিয়া (রা) উক্ত মজলিসে শূরা বাতিল করে দেন এবং দলীয় নেতৃবৃন্দের পরামর্শ গ্রহণের নীতি অনুসরণ করেন।
রাজকীয় রীতির পরিবর্তন: খোলাফায়ে রাশেদূনের খলীফাদের ন্যায় উমাইয়া খলীফাগণ সরল ও অনাড়ম্বর জীবন যাপন করতেন না। সিরিয়ায় আমীর মুআবিয়া (রা) সাসানীয় ও রোমান পদ্ধতিতে দরবারের ব্যবস্থা করেন। মুআবিয়াই সর্বপ্রথম খলীফা যিনি দেহরক্ষী নিয়োগ করেন এবং নামায আদায়ের জন্য মসজিদে নিরাপত্তা কক্ষ নির্মাণ করেন। এভাবে খলীফা কার্যতঃ মহানবীর খলীফা না হয়ে উমাইয়া যুগে রাজা হয়ে পড়েন। উমাইয়া খলীফা উমর ইবন আব্দুল আযীয (র) খলীফা প্রথম উমরের ন্যায় শূরা ভিত্তিক সরকার গঠন করেন। তিনি সাধারণভাবে জীবন যাপন প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তাঁর পরবর্তী উমাইয়া খলীফাগণ পুনরায় রাজতন্ত্র ও তার আনুষঙ্গিক কার্যাবলী গ্রহণ করেন এবং রোমান ও সাসানীয় সম্রাটদের ন্যায় রাজ দরবার প্রতিষ্ঠা, আড়ম্বরপূর্ণ জীবন ও ক্ষমতার চর্চা করতেন।
আরো পড়ুন: ইসলামি রাষ্ট্রের নির্বাচন পদ্ধতি
বংশানুক্রমিক মনোনয়ন
উমাইয়া খলীফাদের রাজকীয় মর্যাদার বিকাশ ঘটে উত্তরাধিকার (অলী আহাদ) মনোনয়নের মাধ্যমে। খলীফা মুআবিয়া (রা) নিজ পুত্র প্রথম ইয়াযীদকে পরবর্তী খলীফা হিসেবে মনোনীত করেন। ইয়াযীদও মৃত্যুকালে তদীয় জৈষ্ঠপুত্র দ্বিতীয় মুআবিয়াকে মনোনীত করে যান। নিজ পুত্রকে মনোনীত করার মাধ্যমে কার্যত উমাইয়া খলীফাগণ খোলাফায়ে রাশেদূনের যুগের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হন। মারওয়ান ও তাঁর পুত্র আবদুল মালিকের সময় খলীফার ক্ষমতাবৃদ্ধি প্রকাশ পায় বল প্রয়োগের মাধ্যমে। মারওয়ানই প্রথম মুসলিম খলীফা ছিলেন যিনি সামরিক ক্ষমতা ও কুটকৌশলে খিলাফত দখল করেন। আবদুল মালিকও সামরিক বিজয়ের মাধ্যমে মুসলিম সাম্রাজ্যে স্বীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। মারওয়ানের সময় থেকে উমাইয়া খলীফাদের মনোনয়নের ধারায় নতুন বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। মারওয়ান তাঁর পুত্র আবদুল মালিক ও আবদুল আযীযকে মনোনীত করে যান। আবদুল মালিক স্বীয় পুত্র ওয়ালীদ ও সুলায়মানকে মনোনীত করেছিলেন। সুলায়মান তাঁর চাচাত ভ্রাতা উমর ইবন আবদুল আযীয ও ভ্রাতা ইয়াযীদ ইবন আবদুল মালিককে মনোনীত করেন। দ্বিতীয় ইয়াযীদ মৃত্যুকালে স্বীয় ভ্রাতা হিশাম ইবন আব্দুল মালিক ও পুত্র ওয়ালীদকে মনোনীত করেছিলেন। এভাবে সুফিয়ানী উমাইয়াদের সময় একজন মাত্র অলী আহাদ (উত্তরাধিকার) নিযুক্তির প্রথা বদল হয়ে মারওয়ানী উমাইয়াদের আমলে দু'জন অলী আহাদ (উত্তরাধিকার) নিযুক্তির প্রথা দাঁড়ায়। অলী আহাদ নিযুক্তির এ প্রথা সাসানীয় ও রোমানদের ন্যায় রাজতন্ত্র ও রাজকীয় ক্ষমতার পূর্ণ প্রকাশকেই নির্দেশ করে।
সাম্রাজ্যের মধ্যে খলীফাই ছিলেন প্রধান ব্যক্তি। আইনগতভাবে খলীফা রাজধানীর মসজিদের প্রধান ইমাম, সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি, রাজস্ব বিভাগের প্রধান পরিচালক, বিচার বিভাগের প্রধান কাযী এবং বেসামরিক ও সামরিক শাখাসহ অন্যান্য সকল দপ্তরের প্রধান ছিলেন।
দীওয়ান বা দপ্তর প্রতিষ্ঠা
উমাইয়া খলীফাগণ বিশাল সাম্রাজ্যের অধিপতি ছিলেন। সেই বিশাল সমাজ শাসনের জন্য প্রশাসন ব্যবস্থাকে তাঁরা পাঁচটি প্রধান দীওয়ানে বিভক্ত করেন। কেন্দ্রের সেই সীওয়ান তত্ত্বাবধানের জন্য খলীফাগণ এক একজন প্রধান কর্মকর্তা নিয়োগ করতেন। নিজ নিজ কার্সের জন্য উক্ত কর্মকর্তা (সাহিব) খোদ খলীফার নিকট দায়ী থাকতেন। নীওয়ানগুলোর সংগঠন ও কার্যাবলী ফিরূপ ছিল ও
১। দীওয়ান আল-জুনুদ (সামরিক দপ্তর): উমাইয়া খলীফাগণ স্বয়ং প্রধান সেনাপতি ছিলেন। কিন্তু
উক্ত বিভাগের সুষ্ঠু তত্ত্বাবধান ও প্রয়োজনের সময় সৈন্য পরিচালনার জন্য একজন প্রধান কার্মকর্তা নিয়োগ করতেন। ভাতা প্রাপকদের তালিকায় তাদের নাম তালিকাভুক্ত থাকত। উক্ত প্রথা ত্রুটিযুক্ত ছিল। সৈনাগণ মস করত, তারা বেতন পাচ্ছে না, ভাঙা পাচ্ছে। তা ছাড়া সে যুগে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য সামরিক বাহিনীতে চাকুরী করা অপরিহার্য ছিল এবং সে কারণে সকল মুসলমানকে সরকারী ভাতা দেয়া হতো। কিন্তু কার্যতঃ সুবিধাভোগী শ্রেণীর অনেকে যুদ্ধক্ষেত্রে গমন করত না। হয়ত বা কোন প্রতিনিধি, বা কৃতদাসকে দিয়ে আরা ভোগী তার সামরিক দায়িত্ব পালন করিয়ে নিত। খলীফা হিশাম সেই কুপ্রথা রহিত করেন এবং ভাতা প্রদানের স্থলে সৈন্যদের বেতন প্রদানের ব্যবস্থা করেন। এ বিভাগের প্রধান দায়িত্ব ছিল সেনাবাহিনী নিয়োগ দেয়া ও তাদের তালিকা সংরক্ষণ। সৈন্যবাহিনী গোত্রীয় ভিত্তিতে নিয়োগ হতো এবং তাদের কার্যাবলী যথারীতি কেন্দ্র দ্বার নিয়ন্ত্রিত হতো। কার্যত খলীফা ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান এবং কেন্দ্র কর্তৃক তাদের বেতন বা ভাতা নির্ধারিত হতো।
২। দীওয়ান আল্-খারাজ (ভূমিরাজস্ব দপ্তর): উমাইয়া যুগে কেন্দ্রীয় ভূমিরাজস্ব বিভাগ ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তাকে বলা হতো সাহিবু-দীওয়ান আল-খারাজ বা সাহিব আল-খারাজ (Director of the finance Department) | স্বয়ং খলীফা কর্তৃক তিনি নিয়োগ হতেন এবং তাঁর কার্যাবলীর জন্য খলীফার নিকট তিনি দায়ী থাকতেন। কেন্দ্রীয় সরকারের আয় ও ব্যয়ের হিসাব দীওয়ান আল-খারাজে সংরক্ষিত থাকত। প্রাদেশিক গভর্নরগণ প্রদেশের আয় হতে প্রাদেশিক ব্যয় নির্বাহ করে অবশিষ্ট অর্থ কেন্দ্রীয় রাজস্ব দপ্তর বা দীওয়ান আল-খারাজে জমা দিতেন। এ বিভাগ হতে উমাইয়া খলীফাগণ সাম্রাজ্যের যাবতীয় জনহিতকর কার্যাবলির বায়ভার নির্বাহ করতেন। বিভিন্ন উৎস হতে যে অর্থ বায়তুলমালে জমা হত সাহির আল-খারাজ তা পৃথক করে রাখতেন।
আরো পড়ুন: ইসলামি সরকার ও আধুনিক সরকার পদ্ধতির তুলনা
৩। দীওয়ান আল-খাতাম (রেজিস্ট্রি দপ্তর): খলীফা মুআবিয়া (রা) দীওয়ান আল-খাতাম প্রতিষ্ঠা করেন। এ বিভাগের কাজ ছিল খলীফার হুকুম নিয়ম মাফিক রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে মূল কপি সীল করত। যথাস্থানে প্রেরণের ব্যবস্থা করা। তৎপূর্বে সরকারী নির্দেশনাবলী বিভিন্ন স্থানে প্রেরণের সময় সতর্কতা অবলম্বন না করে সরাসরি মূল কপি গন্তব্যস্থলে প্রেরণ করা হতো। তাতে অনেক সময় খলীফার আদেশ পত্র জাল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। খলীফা মুআবিয়া (রা) একদা আমর ইবন যুবায়রকে ১.০০.০০০ দিরহাম প্রদানের জন্য যীয়াদ ইবন আবীহকে নির্দেশ প্রদান করেন ও উক্ত পত্র আমরের হাতে প্রেরণ করেন। পথিমধ্যে আমর উক্ত অঙ্ক বদল করে ২,০০,০০০ দিরহাম করেন ও তা যিয়াদকে প্রদান করে দুইলক্ষ দিরহাম গ্রহণ করেন। এ জাল পরে ধরা পড়ে ও আমরকে কারারুদ্ধ করা হয়। পরে আবদুল্লাহ ইবন যুবায়র উক্ত অর্থ প্রদান করে ভ্রাতা আমরকে মুক্ত করেন। এ ঘটনার পর মুআবিয়া (রা) দীওয়ান আল-খাতাম প্রতিষ্ঠা করেন। এ বিভাগে খলীফার আদেশ পত্রের অফিস কপি রেখে মূল কপি সীল মোহর করে গন্তব্যস্থলে প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয়। খলীফা আবদুল মালিকের আমলে এই বিভাগ পূর্ণতা লাভ করে। এ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তাকে সাহিবু দীওয়ান-আল-খাতাম বলা হতো। আব্বাসীয় যুগে এ বিভাগকে দীওয়ান আল-তাওকী বা দীওয়ান আল-ইনশা বলা হতো।
৪। দীওয়ান আল-বারীদ (ডাক বিভাগ): উমাইয়াদের কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগ মুআবিয়া (রা) প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিকে সরকারী কাজের জন্যই এ বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীকালে প্রজা সাধারণও ঢাক বিভাগের উপকারীতা লাভ করে। রাজধানী দামেস্ক হতে প্রতিটি প্রাদেশিক রাজধানীকে সংযোজনকারী প্রধান প্রধান রাজপথগুলোকে ১২ মাইল অন্তর অন্তর মঞ্জিলে (Stages) বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি মঞ্জিলে সরকারী ডাক-অশ্ব বা ডাক-উষ্ট্র সহ সরকারী দূত নিয়োগ থাকত। রিলে (Relay) পদ্ধতিতে সরকারী দূতগণ অতি দ্রুত সরকারী পত্রাদি নির্দিষ্টস্থানে পৌছিয়ে দিতো। বিশেষভাবে আরব ও সিরিয়াতে ডাকের জন্য উষ্ট্র ব্যবহার করা হতো। ডাকের জন্য নির্দিষ্ট অশ্ব বা উষ্ট্রের লেজ কেটে দিয়ে চিহ্নিত করা হতো।
খলীফা আবদুল মালিক ইবন মারওয়ান ঘোড়-ডাকের উন্নতি বিধান করেন। কালক্রমে পোস্টমাস্টারদেরকে তাদের সাধারণ দায়িত্ব ব্যতিরেকে গোয়েন্দাগীরীর দায়িত্বও দেয়া হয়। পোস্টমাস্টারগণ তাদের এলাকার রাজনৈতিক ঘটনাবলীর বিভিন্ন তথ্য গোপনে খলীফাকে অবগত করতো। ডাকের ঘোড়াগুলো ডাক বাহন ছাড়াও সময় সময় সরকারী অফিসারদের দ্রুত গন্তব্যস্থানে পৌঁছানোর কাজ করত। এমনকি জরুরী অবস্থায় ডাক-ঘোড়ার সাহায্যে জরুরীভিত্তিতে সৈন্য প্রেরণের কাজ করানো হতো। ঘোড়াগুলো ৫০ হতে ১০০ জন সৈন্য স্থানান্তরিত করতে পারত। ডাক বিভাগ ছিল ব্যয় বহুল বিভাগ। ডঃ হুসায়নী বলেন, ইউসুফ ইবন উমারের শাসনকালে কেবল ইরাকের ডাক বিভাগের জন্য ৪,০০০.০০ দিরহাম ব্যয় হতো।
দীওয়ান আল-বারীদের প্রধান কর্মকর্তাকে সাহিব আল-বারীদ বলা হতো। প্রাদেশিক অফিসারদের কার্যাবলী তত্ত্বাবধান করার ক্ষমতা ও দায়িত্ব থাকায় সাহিব আল-বারীদের রাজনৈতিক গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। প্রতিটি জেলা হতে পত্রাদি ও সংবাদপত্র প্রথমে স্থানীয় সাহিব আল-বারীদের নিকট পৌঁছত। তিনি সেগুলো সমন্বিত করে দ্রুত রিলে পদ্ধতিতে রাজধানীর সদর দপ্তরে প্রেরণ করতেন। সেখানে প্রধান সাহিব আল-বারীদ সেগুলো সমন্বিত করে খলীফার নিকট উপস্থাপন করতেন। তা ছাড়া প্রধান পোস্টমাস্টার (সাহিব আল-বারীদ) প্রধান প্রধান শহরে ডাক কর্মচারী, বিভাগীয় সম্পাদক, ডাক পিয়ন প্রভৃতি নিয়োগ করতে পারতেন। তাঁর অন্যতম উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব ছিল নিয়মিত বেতন সরবরাহ করা। গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানের ন্যায় তাঁর গুরুদায়িত্ব ছিল সাম্রাজ্যে সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ সকল ঘটনার সংবাদ সরবরাহ করা। পোষ্টমাস্টারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে রাস্তাঘাটের খবর, সহজ ও সংক্ষিপ্ত পথের সন্ধান, বিভিন্ন অঞ্চলে এবং রাজপথের আশে-পাশে কৃষির অবস্থা, পথের পাশের শহর ও গ্রামাদির বিবরণ সংরক্ষণ করতে হতো। পোস্টমাস্টার কর্তৃক বিভিন্ন এলাকায় এ সকল খবর ও বিবরণ সংগ্রহের ফলে মুসলমানগণ ভূগোল বিদ্যায় পারদর্শীতালাত করে ও ভূগোল বিদ্যার উন্নতি হয়।সুলতান আলপ-আর-সালান মন্ত্রী নিযামুল মুলকের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে এ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ রহিত করেন।
৫। দীওয়ান আল-রাসায়িল (সরকারী পত্র রচনা বিভাগ): খলীফা আব্দুল মালিক ইবন মারওয়ান দীওয়ান আল-রাসায়িল প্রতিষ্ঠা করেন। এ বিভাগের কাজ ছিল সরকারী চিঠি পত্রাদি রচনা করা ও তার ভাষা মার্জিত ও সৌন্দর্যমন্ডিত করা। সরকারী পত্রাদি লিখন, ঘোষণাবলীকে মার্জিত ভাষায় প্রকাশ ও ইস্তেহারাদির প্রচার ছিল এই বিভাগের কাজ। তা ছাড়া অন্যান্য বিভাগের মধ্যে সমন্বয় সাধন করাও ছিল দীওয়ান আল-রাসায়িল এর কাজ। ডঃ হুসায়নী উল্লেখ করেছেন, দ্বিতীয় মারওয়ানের সচিব (Secretary) আব্দুল হামীদ এ বিষয়ে সর্বোৎকৃষ্ট বাক্যালংকার প্রয়োগ করেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url