ইসলামি রাষ্ট্রের সংজ্ঞা ও গঠনপ্রণালী
ইসলামি রাষ্ট্রের সংজ্ঞা দিতে পারবেন, ইসলামি রাষ্ট্রের গঠনপ্রণালী সম্পর্কে লিখতে পারবেন, ইসলামি রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে পারবেন।
ইসলামি রাষ্ট্রের সংজ্ঞা ও গঠন প্রণালী
রাষ্ট্রের পরিচয়
মানুষ সামাজিক জীব। আর সমাজের বৃহদায়তন সংগঠনটির নাম রাষ্ট্র। মানুষ কতকগুলো নিয়ম-নীতির মাধ্যমে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে ইচ্ছুক। এ সমস্ত নিয়ম-কানুন বিধিবদ্ধ করে সমাজ জীবনকে সুনিয়ন্ত্রণ ও সৎপথে পরিচালনা করাই রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য। রাষ্ট্র হল সমাজ জীবনের মৌলিক ও কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান। তাই সমাজ দর্শনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল, একটি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। আর এটা মানব সমাজের জন্য অপরিহার্য প্রয়োজনও বটে। ইসলামি নীতি ও চিন্তাধারার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রকে ইসলামি রাষ্ট্র বলা হয়। আর ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থাই একমাত্র সুষ্ঠু ও কল্যাণকর রাষ্ট্রব্যবস্থা।
বিভিন্ন মনীষীর অভিমত
মনীষী এরিস্টেটলের মতে, "রাষ্ট্র হল কয়েকটি পরিবার ও গ্রামের সমষ্টি যার উদ্দেশ্য- একটি যথার্থ এবং আত্মবিসর্জনমূলক জীবন উপহার দেয়া।"
অধ্যাপক লাস্কী বলেন, "রাষ্ট্র হচ্ছে একটি ভূ-খন্ড-ভিত্তিক সমাজ যা সরকার এবং জনগণের মধ্যে বিভক্ত এবং ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে অবস্থিত সকল সংগঠনের উপর প্রাধান্য স্থাপন করে।"
অধ্যাপক গার্নার বলেন, "রাষ্ট্র হচ্ছে এমন একটি জনসমষ্টি যারা একটি নির্দিষ্ট ভূখন্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। যারা বহিরাক্রমণ থেকে মুক্ত এবং যাদের সরকার সুসংহত। যার প্রতি বিপুল জনসংখ্যা স্বভাবতই আনুগত্য প্রকাশ করে।"
সুতরাং রাষ্ট্র বলতে বুঝায় এমন একটি জনসমষ্টি, যারা কোন একটি নির্দিষ্ট ভূ-খন্ডে বাস করে এবং যাদের একটি সরকার ও সার্বভৌম ক্ষমতা রয়েছে।
ইসলামি রাষ্ট্রের পরিচয়
ইসলামি রাষ্ট্র বলা হয় এমন রাষ্ট্রকে, যে রাষ্ট্র ইসলামি নীতি তথা কুরআন, সুন্নাহ ও ইসলামি শরীআতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়।
ইসলামি রাষ্ট্রকে অন্য কথায় বলা যায়-
যে রাষ্ট্রে মহান আল্লাহর একচ্ছত্র প্রভৃত্ব, আধিপত্য ও আইন প্রতিষ্ঠিত। সকল মানুষ সমানভাবে আল্লাহর বান্দা হওয়া ও তাঁর নিকট সকলেরই দায়ী হওয়ার সুস্পষ্ট স্বীকৃতির ওপর যে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তাকে ইসলামি রাষ্ট্র বলে।
অর্থাৎ যে রাষ্ট্রের পরিচালনা, নীতি-নির্ধারণ, প্রশাসন ও আইন-প্রণয়নের ক্ষেত্রে ইসলামি আদর্শ ও রীতি-নীতির পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করা হয় তাকে ইসলামি রাষ্ট্র বলা হয়। ইসলামি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ইসলামি রাষ্ট্রকে বলা হয়
দারুল ইসলাম এ পরিভাষা অনুযায়ী ইসলামি রাষ্ট্র হলো 'দারুল ইসলাম' বা 'ইসলামের রাজ্য'। মুসলিম রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, মনীষী ও ফিকহবিদগণ ইসলামি রাষ্ট্রকে দারুল ইসলাম বলে উল্লেখ করেছেন।
এখানে 'দার' শব্দটি আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাষ্ট্র' বা এরই সমার্থক। ফিকহবিদগণ দারুল ইসলামের সংজ্ঞা দিয়ে বলেছেন-
"দারুল ইসলাম তথা ইসলামি রাষ্ট্র হল এমন ভৌগোলিক অঞ্চলের নাম যা মুসলমানদের কর্তৃত্বাধীনে রয়েছে।"
এ সংজ্ঞায় কতিপয় বিষয়ের স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যা একটি রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। যথা একটি ভূখন্ড, অধিবাসী এবং রাষ্ট্রীয় আদর্শ। মুসলিমদের কর্তৃত্বাধীন বলে রাষ্ট্রীয় আদর্শের প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে আর তাহল ইসলামি আদর্শ। কেননা একথা স্বতঃসিদ্ধ যে, মুসলমানগণ আল্লাহ, রাসূল এবং কুরআন-সুন্নায় বিশ্বাসী বলে তারা যখন পৃথিবীর কোন ভৌগোলিক এলাকায় শাসন কর্তৃত্ব স্থাপন করে, তখন তারা ইসলামি আদর্শ ও বিধান মুতাবিকই যাবতীয় কার্য সম্পাদন করে থাকে। আর এটাই সাধারণ দাবি।
ইসলামি রাষ্ট্রের সংজ্ঞা এভাবেও দেয়া হয়েছে-
"ইসলামি রাষ্ট্র হল এমন দেশ, যেখানে মুসলমানদের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বে ইসলামের যাবতীয় নিয়ম-নীতি প্রতিষ্ঠিত।"
এ সংজ্ঞায় উল্লেখ রয়েছে রাষ্ট্রের আদর্শ ও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের কথা। সেই সঙ্গে এতে রয়েছে রাষ্ট্রের অপরাপর উপাদানের কথাও। যেমন নাগরিক ও ভৌগোলিক অঞ্চল। এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হলো, 'ইসলামি রাষ্ট্র' হওয়ার জন্য দেশের সকল অধিবাসীর মুসলমান হতে হবে এমন কোন শর্ত ফিকহবিদগণের দেয়া সংজ্ঞা থেকে প্রমাণিত হয় না। বরং সেখানে অমুসলিম নাগরিকও থাকতে পারে এবং থেকে আসছেও। এজন্য ফিকহবিদগণ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন।
"অমুসলিম অধিবাসীরাও দারুল ইসলামের নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত।"
অবশ্য কোন কোন ফিকহবিদ কথাটিকে আরো উদারভাবে গ্রহণ করেছেন। তাঁদের মতে 'ইসলামি রাষ্ট্র' হওয়ার জন্য অধিবাসীদের মুসলমান হওয়াও শর্ত নয়, বরং রাষ্ট্রের শাসক মুসলিম হওয়া এবং আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত থাকা তথা ইসলামি বিধি-বিধান মুতাবিক শাসন সম্পাদন করাই 'ইসলামি রাষ্ট্র' হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
ইমাম শাফেঈ (র) এই মত পোষণ করেন। তিনি বলেন-
"ইসলামি রাষ্ট্র হওয়ার জন্য রাষ্ট্রের সকল অধিবাসীর মুসলমান হওয়া শর্ত নয়, বরং রাষ্ট্র ক্ষমতা মুসলমানদের নেতার হাতে থাকা এবং তাকে ইসলামি বিধান মেনে চলাই যথেষ্ট।"
তার মানে নিশ্চয় এ নয় যে, ইমাম শাফেঈর মতে অমুসলিম নাগরিকের ওপরও ইসলামি আইন জারি হবে। তার কথার তাৎপর্য হলো, একটি রাষ্ট্রকে 'ইসলামি রাষ্ট্র' বলে আখ্যায়িত করার জন্য রাষ্ট্র-শাসকের মুসলিম হওয়া ও ইসলামি বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র শাসন করাই প্রথম শর্ত। এটা হয়ে গেলেই তাকে ইসলামি রাষ্ট্র বলা যাবে।
আধুনিক ইসলামি চিন্তাবিদ প্রফেসর খুরশীদ আহমদ ইসলামি রাষ্ট্রের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, 'যে রাষ্ট্রের যাবতীয় কর্মকান্ড ইসলামি আইন-কানুন দ্বারা পরিচালিত হয়, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সার্বভৌমত্ব ও প্রাধান্য মেনে নিয়ে সে মুতাবিক লক্ষ্যে পৌঁছার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয় তাকে ইসলামি রাষ্ট্র বলে।"
ইবনে খালদুনের মতে- "ইসলামি শরী'আতের দাবি অনুযায়ী নাগরিকদের ইহজাগতিক ও পরকালীন কল্যাণ সাধনের সর্বাধিক দায়িত্ব গ্রহণকারী রাজনৈতিক সংগঠনই হল ইসলামি রাষ্ট্র।"
ইবনে তাইমিয়া (র) বলেন: "ইসলামি রাষ্ট্র হল ধর্মভিত্তিক এমন প্রতিষ্ঠান যেখান থেকে সকল আইন প্রয়োগ করা যায়।"
সাইয়েদ রশিদ রিদা বলেন: "ইসলামি রাষ্ট্র এমন এক ধর্মতন্ত্র যা ধর্মীয় ও পার্থিব বিষয়গুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করে।"
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ শামসুল আলম বলেন। আলকুরআন এবং সুন্নাভিত্তিক সংগঠিত এবং পরিচালিত আদর্শবাদী রাষ্ট্রই ইসলামি রাষ্ট্র।
ইমাম আবু হানীফা (রঃ)-এর মতে- "যে ভূ-খন্ডের অধিকাংশ অধিবাসী মুসলমান এবং শাসক ইসলামি নিয়ম-নীতি অনুসারে রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্য সম্পাদন করে তাকে ইসলামি রাষ্ট্র বলে।"
মুফতী মুহাম্মদ শফী (র) বলেন: "কুরআন ও সুন্নাহয় বর্ণিত নীতিমালার আওতাধীন নির্বাচিত সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্রই ইসলামি রাষ্ট্র।"
আধুনিক ইসলামিক চিন্তাবিদদের মতে: "যে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রাষ্ট্রের আইন, শাসন ও বিচারব্যবস্থা গড়ে উঠে-যদি তা কুরআন, সুন্নাহ-এর ভিত্তিতে তৈরি হয় তাহলে সে রাষ্ট্রকে বলা হবে ইসলামি রাষ্ট্র।"
মূলত ইসলামের মূল দর্শনের আলোকেই গড়ে উঠে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা। ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সামগ্রিক অগ্রগতি ও মর্যাদা, প্রসার ও ব্যাপ্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির দায়িত্বে নিয়োজিত সংগঠনটির নাম হচ্ছে ইসলামি রাষ্ট্র।"
ইসলামি রাষ্ট্রের গঠন প্রণালী
সকল রাষ্ট্রেরই গঠন প্রণালী থাকে। ইসলামি রাষ্ট্রের গঠন প্রণালী হবে নিম্নরূপ:
আমীর বা রাষ্ট্র প্রধান: ইসলামি রাষ্ট্রের জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একজন আমীর বা রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন। আমীর বা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত করতে হবে এমন একজন সক্ষম পুরুষকে যিনি যোগ্য, সৎ, খোদাভীরু ও খাঁটি ঈমানদার।
শাসনতন্ত্র: ইসলামি রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্র হবে কুরআন ও হাদীস ভিত্তিক। এ রাষ্ট্রের প্রতিটি বিধি-বিধান প্রণীত ও পরিচালিত হবে কুরআনের আলোকে ও হাদীসের নির্দেশনা অনুযায়ী। একক কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ইচ্ছা কিংবা স্বার্থের পরোয়া এখানে করা হবে না।
মজলিসে-শূরা: রাষ্ট্রপ্রধানকে রাষ্ট্র পরিচালনার যাবতীয় কর্মকান্ডে পরামর্শ দেয়ার জন্য একটি মজলিসে-শূরা বা পরামর্শ সভা থাকবে। জনগণের পূর্ণ সমর্থন ও রাষ্ট্রপ্রধানের সম্মতির দ্বারা মজলিসে শূরার সদস্যবৃন্দ নির্বাচিত হবেন। যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে রাষ্ট্রপ্রধান উক্ত সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে তাঁদের সুচিন্তিত অভিমত নিয়ে শরী'আতের নির্দেশ মোতাবিক রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। এ মর্মে মহান আল্লাহর নির্দেশ
"এবং নিজেদের মধ্যে পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের কর্ম সম্পাদন করে।" (সূরা আস-শূরা-৩৮)
ইসলামি শরী'আতের অনুসরণ
রাষ্ট্রপ্রধান ও মজলিসে-শূরা যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন তা ইসলামি মূল্যবোধ মোতাবিক কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক হতে হবে। এখানে ব্যক্তিগত কোন স্বার্থ বা কৃতিত্ব অর্জনের জন্য ইসলামি বিধান বহির্ভুত কিছু করা যাবে না। সরকার পরিচালনা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, জনগণের উন্নতি-অগ্রগতি সাধন সব কিছুতেই ইসলামি শরী'আত প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে ইসলামি রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য।
অতএব নিঃসন্দেহে বলা যায়, ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থায় কুরআন ও সুন্নাহর আইন জারি ও প্রতিষ্ঠা করাই মূল লক্ষ্য। মানুষের গড়া কোন আইন সেখানে স্থান পাবে না। ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিকসহ সকল পর্যায়ে একমাত্র আল্লাহর আইন মোতাবিক সব কর্মকান্ড পরিচালিত হতে হবে। এভাবে সকলের আন্তরিকতা ও যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত ইসলামি রাষ্ট্রই জনগণের কল্যাণ, সুখ ও সমৃদ্ধি এনে দিতে পারে। এরূপ ইসলামি রাষ্ট্রই ইহলৌকিক ও পারলৌকিক শান্তি ও মুক্তি দিতে সক্ষম।
ইসলামি রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
ইসলামি রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, এমন একটি সমাজ গঠন করা যেখানে সকল মানুষ জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিশ্বস্রষ্টা আল্লহ তা'আলার বিধানের একনিষ্ঠ অনুগামী হবে, নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, সৎকাজের আদেশ দিবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। এ বিষয় সম্পর্কে কুরআন মাজীদে উল্লেখ আছে-
"আমি এদের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে এরা কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, সৎকাজের আদেশ দেবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।" (সূরা আল-হাজ্জ: ৪১)
এই আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামি হুকুমতের বুনিয়াদী লক্ষ্যসমূহ হচ্ছে নিম্নরূপঃ
১। নামায কায়েম করা,
২। যাকাত প্রদান করা,
৩। সৎকাজ তথা ন্যায় ও কল্যাণকর কাজের আদেশ করা ও তা প্রতিষ্ঠা করা,
৪। অসৎকাজ তথা সকল অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখা।
এখানে নামায কায়েম করার কথা বলে সমস্ত শারীরিক ইবাদতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। অর্থাৎ রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রপ্রধানের অন্যতম দায়িত্ব হলো, রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের জন্য শারীরিক ইবাদত আদায়ের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা, যাতে প্রত্যেক নাগরিক নির্বিঘ্নে তা আদায় করতে পারে। অগত্যা কেউ যদি তা পালন না করে তবে তার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করা। যাকাত প্রদান করার কথা বলে আর্থিক ইবাদতের যত দিক রয়েছে, তা যথাযথভাবে পালন ও কায়েমের সার্বিক ব্যবস্থা করাও যে রাষ্ট্রের অন্যতম উদ্দেশ্য তা বোঝানো হয়েেেছ। আয়াতে উল্লেখিত শব্দ দু'টো ব্যাপক অর্থবোধক। অর্থাৎ সর্বপ্রকার সৎ ও কল্যাণকর কাজের আদেশ দেওয়া এবং তা বাস্তবায়িত করা ইসলামি রাষ্ট্রের বিশেষ কর্তব্য। অনুরূপভাবে সমস্ত পাপ ও অকল্যাণকর কাজে বাধা দেওয়া এবং তা মূলোৎপাটন করাও ইসলামি রাষ্ট্রের বিশেষ দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই একটি সুন্দর ও আদর্শ সমাজ এবং কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url